মা প্রজাপতি ও অন্যান্য ছায়া
মায়ের উদ্দেশ্যে বাবা যে চুমুটা ছুড়ে দিয়েছিলেন বাতাসে
শুনেছি, সেই হাওয়াই চুমুটা থেকেই জন্ম নিয়েছিলাে
পৃথিবীর প্রথম প্রজাপতি
মা, পৃথিবীর যেকোনাে নারী থেকে যাকে কখনােই আলাদা করা
যায় না- তাকে খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত-বিভ্রান্ত সেই প্রজাপতিটার
ডানা থেকে টুপটাপ ঝরে পড়ছিলাে রঙের আকৃতি – রঙের
সেই অপচয় ঘােচাতেই সম্ভবত জন্ম হয়েছিলাে পৃথিবীর আর
সব প্রজাপতির
মা বাবাকে খুঁজে পেয়েছেন সেই কবে! অথচ, তার মুখের দিকে
তাকিয়ে কখনােই মনে হয়নি – জীবনে একটাও প্রজাপতি তার
খোপায় বসেছে।
বিলবাের্ড
তােমাকেই ডাকতে চেয়েছিলাম পেছন থেকে, জানতে চেয়েছিলাম
ফুল, পাখি আর প্রজাপতির রাত – অথচ, কোলাহল এসে কেমন
আড়াল করে দিলাে সব, লােকাল বাস এসে বাজালাে হর্ন!
তােমাকে খুঁজতে গিয়েছিলাম বিকেল- বিকেল মাঠে – অথচ
সন্ধ্যা, সন্ধ্যার সব ঘরে নিয়ে গেল! রাত্রি হাসল হা হা…
তােমাকেই জানাতে চেয়েছিলাম কেন হয়নি সুদীর্ঘকাল – শােনাতে
চেয়েছিলাম মেঘ, বৃষ্টি ও নারী নৃপুর থেকে কুড়িয়ে পাওয়া গান – অথচ,
শীতকাল এসে কবিতার দিকে তাকিয়ে বললাে ‘কুয়াশাই জয়ী’।
তােমাকেই ডাকতে চেয়েছিলাম পেছন থেকে, অথচ বিলবাের্ড
এসে সামসে দাঁড়ালাে!
সম্পর্ক
সম্পর্কের খাতা খুলে দেখি – পৃষ্ঠার ওপর দিয়ে
ধেয়ে গেছে ঝড়, হেঁটে গেছে জল
ঝড়ের সঙ্গে জলের ঝগড়াঝাটি হয়ে গেছে খুব
কিছুই পড়া যাচ্ছে না
তবু, সম্পর্কের নতুন খাতা খােলার অভিপ্রায়
আমাকে দৃশ্য জমাতে বলে – হাসি জমাতে বলে
শব্দ জমাতে বলে
এই সব দৃশ্য, হাসি ও শব্দের ধাঁধার ভেতর
কত গান একা একা বাজে!
পানসি
যতটা বয়স পেরােলে কোলবালিশটাকেও জীবিত মনে হয় – মনে হয়
ঘরের ভেতর আরেকটি ঘরের প্রয়ােজন – প্রয়ােজন স্নানের জল তুলে
রাখা – ততটা বয়স পেরিয়ে এস পুরনাে সেই নদীর চোখে দেখি –
কিছু জল শুকিয়ে গেছে – কিছুটা মায়ের চোখে, আর কিছুটা আমিও
খেয়েছি সাকুরায় বসে
জলবিষয়ক সমস্ত কোলাহল সেচে ফেলে- আবার কেউ নদী
হলে – বাকিটা পথ আমি পানসি হয়ে চলে যেতাম।