মুখে কোন কথা নেই

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

মিজানুর রহমান বেলাল

-কে পানি ফেললাে? ছাউনির উপর কে পানি ফেলেছে? সুখিনা-বু তুই দেখেছিস? দিন-দুপুরে চোখের মাথা খেয়েছে? হারামজাদাকে পেলে জুতা দিয়ে পিটাতাম।

-তাের পায়ে তাে জুতা নেই, কী দিয়ে পিটাবী? কৃষ্ণকলি রেল-লাইনের বস্তিতে এতাে রাগ ভালাে না বুঝলি?

-বস্তিতে থাকি বলে আমরা কি মানুষ না? যখন-তখন আমাকে বিরক্ত করবে? গতকাল গভীর রাতে রিক্সা চালক কালু আমার ঘরের বেড়া ফাক করে গায়ে হাত দিয়েছে। কালুর বউ আছে। ঘরে সন্তান আছে পাঁচটা। বুড়া বেটার হিম্মত কী, দৌড় না দিলে বটি দিয়ে ঘারেড় থেকে মাথা নামিয়ে দিতাম। আমাকে কি সহজ-সরল ফুলবানু পাইছে? মিঠা কথা দিয়ে পটিয়ে-পাটিয়ে পােয়াতি বানাবে…। ইজ্জতের দাম আছে। ইজ্জত টাকা দিয়ে কেনা যায় না। মরে যাবাে তাে গতর বিকাবাে না। উত্তেজিত হয়ে কথাগুলাে বলে কৃষ্ণকলি।

-বস্তিতে যে কি হলাে? প্রত্যেকদিন কোন না কোন ঝামেলা লাইগা আছে। গতকাল পিচ্চি জব্বারের ছােট্ট পােলাটা ট্রেনে কাটা গেল? পুরাে বস্তিতে শােক নাইমা আইছে। সাত-সকালে ঝামেলা করিস না কৃষ্ণকলি।

-সখিনা-বু আমার বুকেও তাে শােক জমা আছে। জন্মের পর মাকে চোখে দেখিনি। বাবা আমাকে আদর-সােহাগ দিয়ে বড় করেছে। বাবার মুখে শুনেছি, সিরাজগঞ্জে আমাদের বাস্তভিটা ছিল। এক রাতের মধ্যে নদীর ভাঙ্গনে বিলিয়ে গেছে। তারপর বাবা কমলাপুর এই বস্তিতে এসেছে। এখানেই আমার বড়ে ওঠা। গত বছর বাস চাপায় বাবা মরে গেলাে। আমি এতিম হয়ে গেছি রে সখিনা-বু…. আমার কেউ নেই পৃথিবীতে। যার কেউ নেই সে বুঝে একা থাকার যন্ত্রণা কত কষ্টের। 

কৃষ্ণকলি কান্নায় ভেঙে পড়ে। কান্নামিশ্রিত কণ্ঠে আরাে বলে- বাবা যদি বেঁচে থাকতাে, কালু এতাে সাহস দেখাতে পারতাে?

-শান্ত হ। দুঃখ করিস না। বস্তিটা বড্ড খারাপ হইছে। কালা মফিজের দশ বছরের পােলা গাঁজা টানে আমার সামনে। আমাকে খারাপ পত্রিকার উলঙ্গ পােলা-মাইয়ার ছবি দেখায়। চিন্তা করছিস? কলি যুগ বুঝলি.. এ যুগে এক্টু-আক্টু মানতে হইবাে। না মানলে চলা যাবে না এ সমাজে।

-আমি মানবাে না। আবার যদি কেউ ফের মাথাটা গরম করে, বটি দিয়ে ঘাড় থেকে মাথা নামিয়ে দিমু। জেলের ঘানি টানতে হইলে টানমু তাে হারামজাদাদের চিনিয়ে দিমু কৃষ্ণকলি বেশ্যা নয় যে নুন ভাতের জন্য গতর বিকিয়ে দিবে। বাঁশের বেড়ার ঘরে গতরের কাপড় ঠিক করতে করতে কথাগুলাে বলে কৃষ্ণকলি।

-এতাে তাড়া-হুরা করে কোথায় যাচ্ছিস?

-প্রত্যেকদিন যেখানে যাই। রান্না করতে। আজ একটু দেরি হয়ে গেছে। যাই সখিনা-বু।

-যা।

বাংলা প্যাচে শাড়ি গতরে জড়িয়ে লালটিপ ও লাল লিপিস্টিক কালাে ঠোঁটে লাগিয়ে প্লাস্টিক ভাতের বাটি হাতে করে বের হয়। উদ্দেশ্য রান্না করে দেয়া। কমলাপুর বক্তি থেকে। আরামবাগ মগার গলি পায়ে হেঁটে যায় কৃষ্ণকলি। ব্যস্ত নগরের ব্যস্ত পথের ফুটপাথ দিয়ে। রােজ রােজ একই পথে যাওয়া-আসা। পথের দুই ধারে অনেক পথচারি। চায়ের স্টল। রিক্সা-ভ্যানের গ্যারেজসহ নিম্নশ্রেণীর অনেক মানুষ কৃষ্ণকলিকে চিনে। নরম শাড়ি ভেদ করে কালাে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-পতঙ্গর দিকে তাকিয়ে থাকে সবাই। কেউ কেউ ভালাে ব্যবহারের নামে গায়ে পড়ে কথা বলার চেষ্টা করে। বিষয়টি কৃষ্ণকলি ভালাে করে বুঝতে পারে। রাস্তার পাশের কর্মব্যস্ত পুরুষরা এমনভাবে তাকিয়ে থাকে যে জীবনে কোন নারী দেখেনি। এ কারণে পুরুষদের প্রতি খারাপ ধারণা। পুরুষবিরােধী চিন্তা-ভাবনা কথার মধ্যে পাওয়া যায় প্রায় সময়।

-কৃষ্ণকলি পান খাবি? আরামবাগ গলির ভিতরের পানের দোেকানদার আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাসা করে।

-টাকা নেই। পান খেয়ে টাকা দিবাে কোথা থেকে? তাের বেচা-কেনা কমে গেছে নাকি? ডেকে ডেকে পান ক্ষেতে বলছিস!

-টাকা দিতে হবে না রে। খাবি?

-বেলা অনেক হয়েছে। সকালের খাবার খেতে পারিনি। খালি পেটে পান খাবাে না।

বিরক্তিসূচক প্রকাশ করে কৃষ্ণকলি।

-তােকে আজ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে বােন্বের শ্রীদেবী আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছে। 

-সব পুরুষের একই ভাবনা; অন্য নারীকে শ্রীদেবী মাধুরী মনে হয়। আর নিজের ঘরের বউকে কালনাগিনী মনে হয়? লুচ্চা কোথাকার। এর পরে ফের যদি এমন বিরক্ত করিস, সােজা মতিঝিল থানায় গিয়ে ইভটিজিং মামলা দিয়ে দেবাে, জামিন পাবি না…

-ফুলনদেবীর ছােট বােন মনে হচ্ছে।

কৃষ্ণকলি মুখ ভেংচি কেটে চলে যায়। সিঁড়ি দিয়ে চারতলার গেটে কলিং বেল চাপে। রহিমা বেগম দরজা খুলে দেয়। বিরক্তভাবে জিজ্ঞাসা করে- কিছু দরকার কৃষ্ণকলি?

-না কাকিমা। আসলে ভুল করে কলিং বেল চেপেছি। আমি তাে পাঁচতলায় কাজ করি।

-মাঝে মাঝে ভুল করছিস। কই আগে তাে হয়নি?

-কাকিমা, মাথাটা আজকাল খুব গরম হয়ে যাচ্ছে। মাথা ঠান্ডা করতে হবে। যাই।

সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে বিড়বিড় করে কী যেনাে বলে কৃষ্ণকলি। সেটা কৃষ্ণকলি ছাড়া কেউ বুঝবে না।

-যাবার সময় ময়লার ব্যাগটা কিন্তু নিতে যেতে ভুলিস না কৃষ্ণকলি। তাের তাে আজ মাথা গরম।

-যাবাে। চিন্তা করেন না কাকিমা। 

ক্ষিপ্ত ও রাগান্বিত হয়ে কলিংবেল চাপে। বেল বেজেই যায়। দরজা খুলছে না অপূর্ব। অপূর্ব ব্যাচেলার থাকে। প্রাইভেট ফার্মে চাকুরী করে। দুপুরে অফিসে যায়। রাত বারােটায় ফেরে। তাই সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। অপুর্ব ঘুমঘুম চোখে দরজা খুলে দেয়। ভালাে করে দেখেনি, কে এসেছে। দরজা খুলে বেউ রুমের দিকে চলে যায়। জানে এ সময় কৃষ্ণকলি ছাড়া আর কেউ আসবে না। অপুর্ব বেডরুমে গিয়ে অলস ভঙ্গিতে শুয়ে যায়। কৃষ্ণকলি রান্নার রুমে গিয়ে বুঝতে পারলাে, গতকাল রাতে অপর্ব কিছুই খায়নি। হাড়ি-পাতিল, রান্নার বাসনপত্র সব পরিষ্কার করতে শুরু করে। গুনগুন করে গান ধরে। হাতের কাজ শেষ করে অপূর্বর ঘরে গিয়ে বলে- স্যার, সকালের নাস্তা কি খাবেন? রুটি, খিচুড়ি নাকি পরেটা? অপূর্ব ঘুমঘুম কণ্ঠে উত্তর দেয় তােমার যেটা সুবিধা হবে, সেটাই করাে।

-গত রাতে রাতের খাবার খাননি কেন?

-হােটেল থেকে খেয়ে ফিরেছি।

-হােটেলেই যদি খান তাহলে আমাকে বিদায় করে দেন। শুধু শুধু টাকা নষ্ট করে লাভ কী?

-আচ্ছা ঠিক আছে।

-কবে থেকে আর আসবাে না, বলবেন দয়া করে।

-বেশী কথা বলাে না তাে কৃষ্ণকলি? শরীর ভালাে লাগছে না।

-কি হয়েছে? জ্বর। কই দেখি। 

কৃষ্ণকলি খাটের পাশে বসে অপূর্বর কপালে হাত দিয়ে চমকে উঠে। জ্বরে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। -কিছু না বললেই হলাে? ঘরের লাইট জ্বেলে দেয় কৃষ্ণকলি, কপালের কাছে বসে অভিমান হয়ে বলে-

চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। ঠোঁট দু’টো কালাে হয়ে গেছে। জ্বরে শরীর পুড়ছে। 

গরম নিঃশ্বাস অপূর্বর। কৃষ্ণকলি বাথরুম থেকে বালতি ভর্তি পানি সঙ্গে গামছা ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে বলে- উঠে বসুন। মাথায় পানি দিতে হবে।

-বিরক্ত করাে না তাে! মাথায় পানি দিতে হবে না।

-বেশী কথা বলবেন না। মাথায় পানি না দিলে, জ্বর শরীর থেকে নামবে না। কৃষ্ণকলি বিছানা ঠিক করে প্লাস্টিক পেপার ঘরের নিচে দিয়ে অপূর্ব-র মাথায় পানি দিতে থাকে।

অপূর্বকে পরম শ্রদ্ধাভরে দেখতে থাকে কৃষ্ণকলি। মনে মনে ভাবে- ছয় বছর ধরে বাসায় কাজ করছি। কোনদিন আমার মুখের দিকে তাকায়ে কথা বলেনি। এতাে ভালা মানুষ! কৃষ্ণকলি কোনদিন অপূর্বর এতাে কাছে আসেনি। এতাে কাছে আসার সুযােগ কখনাে হয়নি। এমন কী মুখের দিকে ভালােভাবে লক্ষ্য করেনি। কী সুন্দর স্যার। এলােমেলাে বড় বড় চুলগুলাে কপালে গড়িয়ে পড়ছে। কৃষ্ণকলি হাত দিয়ে চুলগুলাে ঠিক করে পানি দিতে থাকে। মুগ্ধ দৃষ্টিতে অপূর্বকে দেখতে থাকে। ঘন্টা খানিক পানি দিয়ে কপালে হাত দেয় কৃষ্ণকলি। জ্বর কিছুটা কমে গেছে। অপূর্ব শান্তির পরশে ঘুমিয়ে গেছে। কৃষ্ণকলি ঘুমানাে শরীরটা আস্তে করে শুয়ায়ে দেয় বিছানাতে। বালিশ ঠিক করে গামছা দিয়ে মাথা মুছে দেয়। শরীরের উপরে চাদর দিয়ে, ঘরের সব কাজ শেষ করে। ঘরিড় কাঁটা থেমে নেই। দু’টা বেজে গেছে। সকালের খাওয়া খায়নি অপূর্ব। কৃষ্ণকলি অপূর্বর বিছানার পাশে বােবা হয়ে দাড়িয়ে থাকে। বুঝতে পারছে না। ডাক দিবে কি না। ঘুমন্ত মুখখানি বড় পবিত্র লাগছে। কী নিষ্পাপ! মানুষ ঘুমালে যে এতাে পবিত্র লাগে, কৃষ্ণকলি জানতাে না। জড়তা ফেলে ডাক দেয়, বিনম্ৰ স্বরে- স্যার, স্যার…

-হুঁ

উঠবেন না? দুপুর হয়ে গেছে। সকালের নাস্তাও তাে খেলেন না। শরীর আরাে খারাপ হবে। উঠে আস্তে আস্তে অপূর্ব বিছানায় উঠে বসে। বিছানা থেকে নেমে বাথরুমে গিয়ে প্রয়ােজনীয় কাজ শেষ করে ফ্রেস হয়ে খাবার টেবিলে খেতে বসে। মুখে রুাচি নেই। তার পরেও কষ্ট করে খেতে থাকে। অপূর্ব খেতে খেতে কৃষ্ণকলির দিকে লক্ষ্য করে, কৃষ্ণকলি মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অপূর্ব খেতে খেতে বলে- কী দেখছাে? একটা কথা জানাে?

-কী। ছােট্ট জবাব।

-পৃথিবীতে যতােই সুন্দর মানুষ হােক, খাবার সময় সবাইকে বিশ্রী লাগে। আমার টেবিলের উপর মানিব্যাগ থেকে একশত কুড়ি টাকা নিবে। এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট নিচের দোকান থেকে এনে দাও।

-জ্বরের ভেতরে সিগারেট খাবেন?

-জ্বরে সমস্যা হবে না। কমে যাবে। সিগারেট না খেলে আমার মাথা ব্যথা করে।

-শুনেছি ডাক্তাররা বলে- সিগারেট খেলে ক্যান্সার হয়।

-ডাক্তার’রাও সিগারেট খায়। নিজে নিয়ম কানুন না মানলেও অন্যকে জ্ঞান দেবার মতাে বিষয়।

-কৃষ্ণকলি মুচকি হাসি দিয়ে, টাকা নিয়ে সিগারেট এনে দেয়। অপূর্ব খাবার শেষ করে সিগারেট ধরায়। সিগারেট টানতে টানতে জিজ্ঞাসা করে তুমি খেয়েছাে?

-না।

-খেয়ে নাও।

কৃষ্ণকলি ডাইনিং টেবিলে থালা-বাসুন গােছায়ে একটা প্লেটে নাস্তা তুলে খেতে খপতে হেসে উঠে।

-হাসছাে কেন?

-আপনি বললেন, সুন্দর মানুষদের খাবারের দৃশ্য বিশ্রী। আমি তাে কালাে পেতনি তাহলে আমার খাবারের দৃশ্য কেমন হতে পারে? কৃষ্ণকলি সহজ-সরল মানুষদের মতাে হাসতে হাসতে বলে। কৃষ্ণকলির হাসি পবিত্র।

দিন-রাতের আসা যাওয়ার মাঝে নয় বছর চলে যায় সময়ের ক্যালেন্ডার থেকে। অপূর্বর বাবা মা পৃথিবী থেকে চলে যায়। একমাত্র অপূর্ব একা থাকে ভাড়া বাসায়। দেশের বাড়ি রাজশাহীর এক পাড়া গাঁয়ে। অপূর্ব বাসা পরিবর্তন করে। পােশাক, প্রসাধনী, টাকা পয়সা বাড়িয়ে দেয়। কৃষ্ণকলির শরীরে বসন্ত আসে। চোখ ধাঁধানাে রূপে গলতে থাকে আশে পাশের মানুষ। এতাে কিছুর জন্যে অপূর্বকে নিজের অজান্তে ভালােবেসে ফেলে। রাতের আঁধার বুকের উপর চেপে বসে। চোখের পাতা জুড়ে ঘুম আসে না। বুকের পাজর ভেদ করে শুধু দীর্ঘশ্বাস ঝরে। কৃষ্ণকলি বুঝে, বুকের পাটাতনে দীর্ঘদিনের জমানাে কথাগুলাে প্রিয় মানুষকে বলতে না পারার কষ্ট কতাে যন্ত্রণাদায়ক। বিছানায় এপাশ ওপাশ করে রাত পার করে। সাত সকালে ওঠে। অপূর্বর দেয়া কালাে শাড়ি পরে, মুখে প্রসাধনী মেখে, ঠোঁটে লাল লিপিস্টিক মেখে ঘড়ির দিকে তাকায়। সকাল সাতটা বাজে। আর অপেক্ষা সহ্য করতে পারে না। রাস্তায় বের হয়। দ্রুত হাঁটতে থাকে। এক সময় অপূর্বর বাসার সামনে গিয়ে চোখ মাথায় উঠে যায়। হাজার হাজার লােক। কৃষ্ণকলি হাঁফাতে হাঁফাতে বলে- কী হয়েছে? এতাে লােক কেন? কি হয়েছে?

-খুন হয়েছে। একজন লােক বলে।

-খুন! কে খুন হয়েছে?

-বলতে পারবাে না; শুনলাম এই বাসায় ভাড়া থাকে।

কৃষ্ণকলির বুকে ধুক করে ওঠে। কে খুন হলাে? অজানা ভয়ে থরথর করে কাপতে থাকে। লােকজন ঠেলে সামনে এগিয়ে যায়। এমন সময় পুলিশ অপূর্বর রক্তাক্ত লাশ গেট থেকে বের করছে। কৃষ্ণকলি চিৎকার দিয়ে বলে- ও আল্লাহ গাে…এ তুমি কি করলে… এতাে ভালাে মানুষকে তুমি এ দুনিয়া থেকে তুলে নিলে…? এমন সময় বাড়িওয়ালা পুলিশ আফিসারকে বলে- স্যার এই মেয়েটা অপূর্বর বাসায় কাজ করতাে। পুলিশ অফিসার ইঙ্গিত করতে একজন পুলিশ এসে কৃষ্ণকলিকে হাতকড়া পড়ায়। পুলিশ অফিসার বাড়িওয়ালাকে বলে- এই মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে অনেক কিছু পাওয়া যাবে মনে করছি। কৃষ্ণকলকে গাড়িতে ওঠায়, পাশে অপূর্বর রক্তাক্ত লাশ। কৃষ্ণকলি বােবা কান্নায় পাথর হয়ে যায়। বুক ফেটে যাচ্ছে অপূর্বকে হারানাের কষ্টে। মুখে কোন কথা নেই। ফটোসাংবাদিকদের ক্লিকক্লিক ফ্লাশে কেঁপে ওঠে আকাশ-বাতাস।

মন্তব্য: