অভিমানে অভিমন্যু চলে গেল একা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নিষাদ নয়ন

কবিতার বিশ্ময় বেছে নিল স্বেচ্ছামৃত্যু, ঝুলে গেল আতপ স্বপ্নসমাহার নিয়ে সান্ধাকৃত্যের অভিপ্রায়ে। বাংলা কবিতার যে কজন কবি পাল্টে দিতে এসেছিল, চেয়েছিল কবিতার গােলক। শামীম কবীর তাদেরই একজন। যার প্রায় প্রতিটি কবিতায় কবিতার বিস্ময়ের অবধি অতিক্রম করে গেয়ে দ্যুতিময় মুগ্ধতায়। বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তীকালে এমন বিপুল শক্তিমান কবির পদচারণা তেমনভাবে দেখা যায়নি বলেই চলে। মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে চলে গেলেও রেখে যাওয়া কবিতার স্বকীয়তা তাকে টিকিয়ে রেখেছে, টিকিয়ে রাখবে আরও অনেক দিন। তার কবিতা লিটলম্যাগে ছাপা হত, সে নিজে ছােটকাগজের কবি কিন্তু নিঃসন্দেহে বড় মাপের কবি। তার কবিতা শুধু বাংলা কবিতায় নয় বিশ্বকবিতার যে কোন শক্তিমান কবির সাথে তুলনীয়। নদী, প্রান্ত, রূপম, দ্রষ্টব্য, শিড়দাঁড়া, দুয়েন্দে, ডামি এডিশন, ক্ষুধার্ত সময় (কোলকাতা) ও একবিংশ পত্রিকায় ছাপা হলেও কবিতা আপন দ্যুতিময় লেখনীর মাধ্যমে সমকালের কবিতাভুবনে শামীম কবীর খুবই পরিচিত নাম। শুধুমাত্র লিটলম্যাগে লিখেও একজন কবি উঠে আসে কবিতার আড্ডায়। দ্রষ্টব্য পত্রিকায় ১৯৯৫- ৯৬ সালে ছাপা হয়েছিল তার বিখ্যাত কবিতা – মা’র সঙ্গে বাক্যালাপ, ম্যানসাইজ আরশি কিংবা আত্মহত্যা, আরাে এক টুর্নামেন্ট, গােলাপী ও ছাদের ওপর জন্মদিন, আরাে একটি চাঁদ, মরীচিকা পাঠ, নভেরাসহ আরাে কিছু অসাধারণ কবিতা যা তাকে পৌঁছে দেয় বৌদ্ধিক পাঠকের কাছে। দ্রষ্টব্য সম্পাদক কামরুল হুদা পথিকের নিজস্ব উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল শামীম কবীর সংগ্রহ। শামীম কবীর খুব বেশি দিন লেখালেখি না করলেও তার দীপ্র প্রতিভা বা লেখনী ক্ষমতা সম্পর্কে কারাে মনে নতুন করে সন্দেহ বা প্রশ্নের অবকাশ থাকছে না কারণ একটাই সে চলে গেছে বুকের ভিতর দগদগে অভিমান নিয়ে, হারানাের বেদনা- প্রত্যাখান সঙ্গে করে তবু রেখে গেছে কবিতার সােনালি সম্ভার। কবিতা, বেশকিছু গদ্য ছাড়াও তার আঁকা স্কেচ ও ছবি যথেষ্ট স্বপ্রতিভ স্বাক্ষর বহন করে যা

আঁকিয়েদেরও নাড়িয়ে দিতে পারে। তার লেখা ডায়েরি যে কোন খ্যাতিমান বা প্রখাত কবি সাহিত্যিকের যাপনকালীন অভিজ্ঞার চেয়ে কোন অংশে কম তাৎপর্যপূর্ণ নয় বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক বেশি কারণ তার রােজনামােচায় শুধু নিছক দিনাতিপাতের কথা লেখা নেই। ডায়েরি হয়ে উঠেছে একজন প্রাজ্ঞ শিল্পীর চিন্তন ও মননের বহিঃপ্রকাশ।

শামীম কবীরের কবিতার বিষয়াশয় তার সমসাময়িক কবিদের থেকে অনেক বেশি বহুবর্ণপ্রভা, বহুরৈখিক, নিরীক্ষাধর্মী। প্রচলভাঙার ব্রত নিয়ে অনেকটা ব্রাত্য কবির ভূমিকায় রেখে গেছ়ে কবি হিসেবে। আধুনিক কবিতার ভাললাগা মন্দলাগার খােলস খুলে ফেলার জন্য তার কবিতার একটা বড় ভূমিকা আছে শুধুমাত্র বাংলা কবিতাঙ্গনে। তার কবিতায় একই সাথে আধুনিক ও উত্তরাধুনিক বীক্ষণ উপস্থিত। তবে আধুনিক ঘেরাটোপ ডিঙিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় বেশি থাকে। প্রতিকবিতা, নতুন কবিতা, বহুস্বর, বিনির্মাণ, আন্তর্বয়ান-মানবায়ন, বহুরৈখিকতা, নৈঃশব্দ্য ও নির্জনতা, এব আত্মপ্রতিফলন চেতনা তার কবিতায় যেমন পাওয়া যায় তেমন আরাে আছে নগর অনুষঙ্গ, রাজনীতি, প্রেম ও দ্রোহসহ আধুনিক লক্ষণসমূহ। শামীম কবীর সংগ্রহ বের হওয়ার আগে তার কোন কবিতার বই বের হয়নি। যেখানে স্থান পেয়েছে তার চারটা পাণ্ডুলিপিসহ গদ্য, ডায়েরি এবঙ কিছু চিত্রকলা। চব্বিশ, রোগশয্যার আলােবাদ্য, মনে হচ্ছে যাচ্ছে রেল, কোথায় দেবাে রাজস্ব – এই চারটি কবিতা পাণ্ডুলিপিকে পৃথক বই হিসেবে বিবেচনা করলে দেখা যাবে তার কাব্যচার্চার বেসাতি একবারে কমও নয়। এবার তার কবিতার আলােকসম্পাতের দিকে চোখ ফেরানাে দরকার। তার কবিতা পড়ার সময় প্রতিনিয়ত বিস্ময় আর আত্মজিজ্ঞাসার উন্মােচন হতে থাকে বা শুরু হয় পাঠকের অবচেতনে। এখানে বলে রাখা ভাল যে তার কবিতার সাথে নিজের সংযােগ বা মনেযােগ করার জন্য প্রয়ােজন দেখা দেয় জানা-বােঝার মর্মর ছুঁয়ে যাওয়া। এখানে শুধুমাত্র তার সংগ্রহের ‘চব্বিশ’ পর্ব কবিতার থেকে আলােচনা করছি। ‘মা’র সঙ্গে বাক্যালাপ’ পড়ে যে কোন পাঠক বহুমাত্রিকতার স্বাদ পাবে। এই রকম আরাে কিছু কবিতা যার ভিতর রয়েছে পর্ব-বিভাজন, আলাদা আলাদা কবিতার মতাে ।

দেয়ালের চোখ নেই/কেবলই স্বচ্ছতা মাথা খাড়া/কাতােকাল/আর এখানেই/ মাঠের মধ্যম কোণে রােপিত রাখাল’

কিংবা

‘সারাক্ষণ হাতে চাই গানের বাকশাে/যেতে যেতে গান গাবাে/তাই/সারাক্ষণ হাতে চাই গানের বাকশাে/যেতে হবে গান গেতে গেতে/নানা রঙের উদগ্র আকৃতিঅলা ফাটাফাটি গান’

আবার

‘আর একবার ঘুরে পেছনে তাকাবাে/কি তাকাবাে না/ভেবে/সমস্ত ভাঙ্গা টুকরাে গুছিয়ে কুড়িয়ে আবার/আমাকে জোড়া লাগালাম/কিন্তু হাত কই/তােমার বিপুল গড়নের মধ্যে/ কোনােখানে/ একটুকরাে জটিল উল্লাস আছে/ তার স্পর্শে বদলে যায় প্রভাতের ঘ্রাণ/ আর আমি/ ভয়ে ভয়ে/ মানুষ হয়ে/ উঠে দাঁড়াই (মা’র সঙ্গে বাক্যালাপ)

সময়ের সাথে সাথে কবিতার বাকবদল ঘটে, কবিতার ভাব-ভাষার বিস্তর বদলে যাওয়া যে সব কবির মাধ্যমে ঘটে তার সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু শামীম কবীর তাদের একজন। তার সময়কার অনেক কবি এখন অবধি লাগাতার লিখেও তার মতাে এতটা বহুল পঠিত বা আলােচিত কিঙবা সমালােচিত হয়নি। দশক বিভাজন বা মিডিয়াবাজীর সময়ও তার ক্রমশ বহুল পঠন হচ্ছেই না কথিত নয়ের দশক বাংলা কবিতার যে পরিবর্তন তাতে শামীম কবীরের অবদান অনেক বেশি। এতদিন আমাদের মধ্যে না থেকেও আছে শুধু মাত্র তার বিভাময় কবিতার জন্য। নতুন কবিতা লেখার জন্য এখনকার কবিদের আবারও শামীম কবীরের কবিতা পড়তেই হবে। কারণ তার কবিতার ধ্যান-ধরণ সম্পূর্ণ নতুন কবিতার ধাছে লিখে যায় বলেই মনে হয়। বিষয় প্রকরণ উপস্থাপনা থেকেই তাকে সহজে পৃথক করা যায়। আধুনিক ও উত্তরাধুনিক অনুষঙ্গের সমান উপস্থিতি দেখা যায় শামীম কবীরের কবিতায়। তার কবিতার ভিতর উভয় লক্ষণসমূহ এক বিশেষ ঘরনা তৈরি করেছে। তার কবিতাবােধের কড়া নাড়ার জন্য এসব কথিত সাহিত্যের ইজম না জানলেও বুঝতে তার কবিতা বুঝতে কোনপ্রকার অসুবিধা হয় না। কবিতার বিষয়কেন্দ্রিকতা যেমন আছে তেমন আছে অনির্দিষ্টতা, বিভিন্ন বিষয়কে তুলে আনার সাথে সাথে অন্য একটি সংবেদন জাগিয়ে তােলে তার কবিতা। একই কবিতায় দেখা যায় উঠে আসে নির্জনতা, অনুপস্থিতি, নিরাশা, নগরমন্থন, বীতশ্রদ্ধ রাজনীতিক খােলনলচে বা পুঁজিকেন্দ্রিক গিলগামেশ এবঙ ফ্রয়েডিক মনােজৈবচেতনার উদ্ভাস। আর আছে মানবায়ন, বহুরূপ দক্ষতা, আত্মপ্রতিফলন, প্রতিআখ্যান, বিরােধ, বিনিমার্ণ, মিশ্রণ যা উত্তরাধুনিক কবিতার মূলসুর বা লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত। যেমন আধুনিক কবিতার দিবসমূহ ছাপিয়ে যাওয়া কিছু পঙক্তি-

ওরা যাবে আকাশ অবধি/তবে আমরা তাে জানিই যে আকাশটা কতখানি উঁচু/ আর উচ্চতাগুলি অনিবার্য এবং সরু সরু/ আর পাতাল থেকে ওঠা ওদের ভিত/ নিশ্চয়ই খাঁটি/ কারণ অনেক পুরনাে কিছু পাতালের ছাপচিত্রে/ অবাক করা শাক্ত মুদ্রা আমাদের বহু দ্যাখা/ বহু পূর্নজন্ম ধ’রে/ আর এইসব ভিতের পাশে শুয়ে বসে/ দাঁড়িয়ে আমাদের অপেক্ষা’

কিঙবা

‘ভেসে যেতে যেতে যেতে যেতে/ শােকে এ এসে ঠেকলাে স্কন্ধহীন পায়া/ বদ্ধ শােকে/ পর পর/ চারবার/ তারপর/ তখন আর কিছুই করার ছিল না’ (মা’র সঙ্গে বাক্যালাপ)

‘এইভাবে বন্ধুপনা পেঁকে ওঠে/ সরল এলাচ আর লবঙ্গ ফলার সঙ্কলন/ বুকে বুকে বাড়ি খায়/ অকস্মাৎই…. যৌগ হয়ে যায়’ (নিশিন্দারা)

‘ঠিক সেই বেলুনগুলাের মতাে/ সেসব আমরা কিনি আর/ জন্মদিনে আসর সাজানাে থেকে ফিরে এসে/ হােটেলে ঘুমিয়ে পড়ে/ দ্বিতীয় পুলকে ভেসে যায়’ (বৃষ্টি দিনে)

প্রতিকবিতা বিষয়টি এখন প্রায় কারাে না কারাে মুখে শুনতে হয় কিন্তু শামীম কবীর যখন কবিতা লেখা শুরু করে তখন এই বিষয়টি অনেক কবির অগােচরে থেকে যায়। যত বলাযায় বাংলাদেশের কবিদের মধ্যে শামীম কবীরই খুব সম্ভবত প্রথম প্রতিকবিতা লিখতে শুরু করে। প্রতিকবিতার কথা বললে বা লিখতে গেলে যার অবধারিতভাবে মনে আসে তিনি নিকানাের পাররার। যার হাতের কলম, মাথা আর শাদাপাতায় ভেসে উঠেছিল প্রতিকবিতা। শামীম কবীরের প্রতিকবিতাগুলাে ঠিক অন্যরকম প্রতিচিত্র আর প্রতিআখ্যানের মুখােমুখি দাড় করাতে চাই পাঠককে। যেমন –

‘একদিকে উলঙ্গ পাগলগুলি/ আর তাগড়াদের পাল/ শশ্মান মঞ্চের মতাে কিছু তথ্য/ বিলম্ব আকারে বায়ে ছিটিয়ে এবং/ পরে নিজেরা সন্ধান করে নিজের বয়স/ ঔ কী দিকে যে অন্ড ফাটে/ তার শব্দে দোকানের ভান্ডগুলাে ফেঁসে যায়/ বিদীর্ণ বালিশে চেপে’ (উপমান এক্সপ্রেস)

‘তিন ছাড়া আর সবই অর্থহীন/ যাকে আমি শিশ্ন দান করেছিলাম সেও জানে/ জানালায় কান পেতে শীৎকার শােনার আশা করে/ তিন হলাে সংখ্যা এক/ তিন- এ বুঝি ব্ৰহ্মান্ডের ফাটলের মানে/ সেসব ফাটলের বেয়ে আমার দুটি ছায়া/ নেমে আসে পিতামাতাকারে/ আর যাকে শিশ্নদান করেছিনু/ ভাগ্য ভালাে সেও বােঝে তিনের মহিমা’ ( তিন ছাড়া অন্য সংখ্যা কিছু নয়)

সুররিয়ালিজম ও ম্যাজিকরিয়াললিজম বিশ্বসাহিত্যের অনবদ্য ও যুগান্তকারী মতবাদ তা বলার অপেক্ষ রাখে না। কবিতা, গল্প, কথাশিল্প, চিত্রকলা, চলচিত্রে সবচেয়ে সারাজাজ্ঞানাে অভিপ্সার দরজা-জানালা খুলে দিয়েছে। সুররিয়ালিজম প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও ম্যাজিকরিয়ালিজম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে শিল্পকলার অনবদ্য বিষয়ে পরিণত হয়ে গেছে। প্রথম বিষয়টি জীবনানন্দ দাশের হাতে বেশ আগে থেকেই পাকাপোক্ত যা পরবর্তী অনেক কবিদের কবিতায় উঠে এসেছে। দ্বিতীয় বিষয়টি বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে বেশ পুরােনাে হলেও তেমন বলিষ্ঠ কবিতা লেখনীতে খুব কমই উঠে এসেছে তবে উভয় বিষয় শামীম কবীরের কবিতায় দেখা যায় অনেকটাই উপস্থিত। বাস্তবকে আরাে জীবন্ত-তীক্ষ্ণ ও অন্যরকম করে ভাবার খােরাক জোগাবে পাঠকের মনে। শিল্পের এ সমস্ত দিক বা প্রবণতার কথা লিখে বােঝানাে খুব মুশকিল আর কবিতায় এগুলাে বিচার করে দেখানাে আরাে জঠিল ও কঠিন। কবিতার কিছু পঙক্তি থেকে –

‘একদা সেখানে ছিলাে নিরবতা/ (এবং) ছিলাে নিবিড়তা/ একজন দুইজন আর কিংবা তিনজন/ ক্রমে লােকালয় স’রে গ্যাছে/ স্বচ্ছ ভিজে সকালের আড়মােড়া কালে/ সব মানুষই ম’রে গ্যাছে/ প্রকম্পিত হলাে বুঝি জন্মের রহস্য (আরাে এক টুর্নামেন্ট)

একা যাও/ যেতে পারাে মাথার ওপর তারা চিনে/ ডাক শুনে পেছনে হাঁসের নৌকা তাড়া করে/ আমাদের জাল ভাই জাল বােন/ পিতা মাতা জাল কিনা জানাটা জরুরী এই পিতা মাতা থাকতে হয় আছে’ (আরাে এক টুর্নামেন্ট)

পথে আমরা প্রচুর ক্যানাবিস খেলাম। ফলে/সবকিছু ভুলে গেছি। অবশ্য অন্যের কথা না/ জানলেও আমি সেই অসুখটাই চাচ্ছিলাম। কারণ The sickness of mine is cosmic event/ কেবল এটিই আমার মনে আছে’ (আরাে এক টুর্নামেন্ট)

‘খেলতে খেলতে/ধুলা হ’য়ে গ্যালাে আমাদের/খেলা’ (মা’র সঙ্গে বাক্যালাপ)

‘তিন-এ আসে আমি ছায়া আর/ ছায়ার ছায়াটি/ অথবা যৌথ-ও ছায়া এবং প্রচ্ছায়া’ (তিন ছাড়া অন্য সংখ্যা কিছু নয়)

‘এমন আতপ মৃত্যু মাটি শুধু/মৃত্তিকাই পুঁতে রাখা জানে’ (ভােরবেলার স্বপ্ন নিয়ে ভাসা)

‘বহু কিছু দেখি নাই/দ্যাখা যায় ইউক্যালিপটাস/বনের যৌবন ভেদ করে আছে খাড়া/ দেখি তবে সঙ্গোপনে/ তার চার স্তন-অলা ঐ কড়া মানবীর কাছে মাপ চাই/ একটি ত্রিভুজ মেঘ হঠাৎ আড়াল করে/ দেখি কিন্তু ভুলে যাবাে’ (আরাে একটি চাঁদ)

শামীম কবীর শুধুমাত্র বাংলা কবিতার নয় সমকালীন বিশ্বকবিতার যে কোন কবির সাথে তুলনাযােগ্য প্রতিভা। তার অভিমানে চলে যাওয়ার এতবছর পর কোন ডামাডােলে না থেকেও নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে অনন্য কবিতার পঙক্তি গাঁথুনিতে, আরও অনেকদিন তার কবিতা নতুন কবিতার লেখার প্রেরণা হয়ে থাকবে লিখিয়েদের কাছে। কবিতার বিভিন্ন ধারা বা ইজমকে বাদ দিয়ে বিচার করলেও তার কবিতাপড়ার মুগ্ধতা, বিস্ময়, জিজ্ঞাসা আমাদের ছেড়ে যায় না। শুধুমাত্র আলাের প্রতিসরণের মতাে অবিশ্রাম ভাবনার কেন্দ্র হয়ে থাকে পাঠকের কাছে…

মন্তব্য: