আত্মহত্যা আর জনপদের দু:খ এক কথা নয়- দীপা ভাটিয়া

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

সাক্ষাৎকার গ্রহণ: শ্রদ্ধা শুকুমরণ

অনুবাদ: দুপুর মিত্র

সাক্ষাৎকার সংগ্রহ: মুম্বাই মিরর ডট কম

শেষ পর্যন্ত ২ লাখ কৃষকের আতœহত্যা নিয়ে তৈরি ছবি নীরুস গেস্ট মুক্তি পেয়েছে। গত এক দশকে গণতান্ত্রিক ভারত রাষ্ট্রের নানা জায়গায় আত্মহত্যা করেছে কৃষক। কিন্তু এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নামকরা মিডিয়ায় এই খবর আসে নি কখনো। শুধু তাই নয়, এই ছবি যেন প্রদর্শনীতে আসতে না পারে সেজন্যও সরকার কম চেষ্টা করে নি।

নীরুস গেস্ট ছবিটি পরিচালনা করেছেন দীপা ভাটিয়া। তিনি মাই নেম ইস খান, রক অন, তেরে জমিন পর, দ্য হেংম্যান, মেনে গান্ধি কো নেহি মেরা, দেব, তষ্কক, হাজার চুরাশির মা সিনেমায় ফিল্ম এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। দীপা ভাটিয়ায় এটাই প্রথম তথ্য চিত্র। মুম্বাই মিরর ডট কমে শ্রদ্ধা শুকুমরণ দীপার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এখানে সাক্ষাৎকার অনুবাদটি তোলে দেয়া হল।

মাই নে ইস খান চলচ্চিত্রটি সম্পাদনা কিভাবে করেছেন?

আমি একেবারে সত্যিকারের বাণিজ্য সিনেমা করি নি। আমি মৃত মগজের সাথে চলতে পারি না। আমি এমন ধরনের চলচ্চিত্র পছন্দ করি না মূলস্রোতের কোন ধারনাকে আঘাত করে। এমএনআইকে তে একটি বার্তা আছে। একটি রাজনৈতিক পাঠ আছে। আমি পান্ডুলিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। একজন সম্পাদক হিসেবে আমি সবসময়ই একে মহাকারে সাথে তুলনা করে তৈরি করতে চাই।

আপনার এবং কোরন জহরের বিষয়টা একটু বলবেন?

এটি আমার অনেক বড় ভয়। সে খুবই আমার উপর ক্ষেপে আছে যে আমি এখনো তার কাভি খুশি কাভি গাম সিনেমাটি দেখি নি। আসলে আমরা দুই পৃথিবী থেকে এসেছি। আমি জনু বড়–য়া বিখ্যাত চিত্র পরিচালক গোবিন্দ নিহালিনীর এর সাথে কাজ করেছি। আমি বিশ্বাস করি সিনেমা পৃথিবীকে পাল্টে দিতে পারে। কিন্তু করণের ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।

তবে আমার মন হয় সে খুবই গণতান্ত্রিক, সে কি করতে চায় সে ব্যাপারে সে খুব পরিস্কার আর এজন্য আপনাকে সে খুব একটা জায়গাও করে দিবে।

এটা কি নীরুস গেস্ট বিষয়েও? আপনি একই সময়ে কিন্তু নীরুস গেস্ট তৈরি করেছেন। আমি প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে এই সিনেমাটি তৈরি করেছি। ভারতের কৃষক আতœহত্যার বিষয়টি কিন্তু যেনতেন বিষয় নয়। আমি গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে চিত্রায়ন করেছি। আপনি ভেবে সিদ্ধান্ত নেন। আমি ৩০০ ঘণ্টারও বেশি সময় কাজ করেছি।

একটা আর্থিক সমস্যা ছিল। কাজেই আমি রক অন টা করেছি। তবে আমি নীরুস গেস্টকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমি ২৫ ঘণ্টা করে সম্পাদনা করতাম। আমি বাসায় ফিরতাম, বাচ্চাকে সময় দিতাম। তারপর নীরুস গেস্টকে নিয়ে বসতাম।

এই কাজ করতে গিয়ে আপনি কি আবেগী হয়ে পড়ছিলেন কখনো?

হ্যাঁ! এটা খুবই দু:খজনক। খুব ছোট একটা ঘটনা কি এটা? কিন্তু এটা মিডিয়াতে আসে নাই। দুই লাখ কৃষক মারা গেল। কিন্তু আপনাকে একে মিডিয়ার সামনে আনতে সংগ্রাম করতে হলো। ৫ হাজার রূপির জন্য একটি পরিবার তার সদস্যদের হারালো। এটি খুবই হৃদয় বিদারক।

দুই পৃথিবীর মধ্যে একটা বড় ফারাক রয়ে গেছে। তবে আমাকে এ কাজ করার জন্য উৎসাহও দেওয়া হয়েছে। আমি যখন অর্থের জন্য দৌড়তাম, করনকে এটি এডিট করতে বলে যেতাম। আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় এটি তৈরি করতে গিয়ে আপনি কি শিখেছেন?

সেই নাথ বলতেন, আত্মহত্যা আর জনপদের দুঃখ এক কথা নয়। অনেক কৃষকই যারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন, তারা আত্মহত্যা করতে চান নি। তারা শিকার হয়েছেন। গ্রামীন অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্যনীতি এর জন্য দায়ী।

আমি এই গ্রাম আর শহরের বিভেদটা দেখতে চেয়েছি। আমার ভাষাটা সরল। আমি কলেজ ছাত্রদের সাথে কথা বলেছি। আমরা তাদের কথা বলেছি, বাবা সে সময় তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমার মনে হয় এটি সমাধান নয়, প্রয়োজন সজাগ করে তোলা।

আপনি আমির খানের সাথে টিজপিতে কাজ করেছেন। তিনিও ভারতের কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে পিপলি লাইফ তৈরি করেছেন। 

আমি এটি শুনেছি। আমি এটি দেখতে খুবই আগ্রহী। আমার মনে হয় এই ইস্যুটি বেশ সংবেদন সহকারেই সেখানে ফুটে উঠেছে।

শেষ পর্যন্ত আপনার হাজবেন্ড অমল গুপ্ত?

(হাসতে হাসতে) অভিনয় আসলে একটি দুঘর্টনার মত। তবে অমলের এখন একটা ভাল সময় যাচ্ছে। সে সম্প্রতি শ্যুট করছে স্টেনলি কা ডাব্বা নামের একটা ছবির। এটা আমি কাটিং করছি। আশা সামনের গ্রীষ্মেই কাজটি শেষ করে ফেলতে পারবে।

মন্তব্য: