কাজী কল্লোল অনূদিত কবিতা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

পাবলাে নেরুদা

ভুলে থাকা যায়না

যদি প্রশ্ন করতে, এতােদিন কোথায় ছিলাম,

আমাকে বলতে হতাে, “এভাবেই ঘটে চলে সবকিছু।”

মাটির জঠরে লালিত নিকষ পাথরে বেঁধেছি ঘর,

যেখানে দুর্মর নদী ভেঙে চলে তার পথের দু’ধার:

যে পাখি হারিয়েছে সব- আর কিচ্ছু নয়-

শুধু তার দুঃখটাকে জেনেছি কেবল,

অথবা সেই সমুদ্র- যার নােনা জলে গা ধুয়েছিলাম,

অথবা আমার প্রিয় বােনের কান্নার ফোঁটাগুলাে

কেন সবকিছু ভেঙে পড়ে? প্রতিদিনের স্বপ্লগুলাে

কেন এসে মরে যায় বিষন্ন সন্ধ্যায়?

কেন আঁধারের গায়ে আরাে অধিক আঁধার জমে?

কেন মৃত্যুর হীম হানা দেয় জীবনের অলিতে গলিতে?

যদি প্রশ্ন করাে কোথা থেকে এলাম, তবে বলতেই হবে,

টুকরাে টুকরাে সেইসব কথা-

পড়াে ঘরের বিশীণু চৌকাঠ,

ভেতর মহলের দগ্ধ হৃদয়,

বিস্মৃতির গহণ হতে উঠে আসা কোন মুখশ্রী,

আশা ভঙ্গের অভিশাপে আর্দ্র চোখ,

আমাদের কণ্ঠনালীতে চেপে বসা আঙুলগুলাে,

আর যাকিছু আছে সব- সবকিছু আছড়ে পড়ে ভূমির পাজরে:

দিন যাপনের আঁধার এভাবেই বুঝি নোঙর ফেলে রক্তের গভীরে।

তবু দ্যাখাে, উজ্জ্বল মঞ্জরিত শাখা, বিকেলের আলােয় শালিখ;

আমাদের প্রিয় মুখগুলাে পূর্ণবার মুখরিত ভালবাসার গানে

তখনই বাতাসে ওঠে পুরনাে সুখের তান অকস্মাৎ।

দুঃস্বপ্নকে পেরােবার সাঁকো ভেঙে গেলে পর

ভালবাসার ওমে সেঁকে নেই হৃদয় হৃদয়:

কেন বৃথা কান্নায় নিস্তব্ধতাকে ভরিয়ে তােলাে?

অজুত মৃত্যুর গন্ধ চারধারে, জানি-

তবুও তাে ঝিলের পানিতে ঝিকিয়ে ওঠে সুরের আলাে

তবুও তাে প্রিয় মুখ বাঙময় হয় মুখরিত গানে

তবুও তো উত্তাল চুম্বনে খুলে যায় হৃদয়ের সকল দুয়ার

আর তখন সবকিছু ভুলে যেতে খুব ইচ্ছে হয়।

মন্তব্য: