অসুখের শিরোনাম

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

জাহিদ সোহাগ

১.

বাহ্ আমার দেহের চামড়া ফেটে ফেটে বেড়িয়ে আসছে বীজের অঙ্কুর- যেন বা ঘুম ভেঙে সবেমাত্র দেখছে ভোর; ক’দিন ছোলা ভিজিয়ে রাখলে যেমন পাখির নোখের মতো তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠে- আমি আলতো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি। আর নাভীতে বিষ্ঠা ফেলে গেছে নিসর্গের কাক- আমার দেহ যেন হয় মহীরুহ আর লতাগুল্মের জঙ্গল। বুনো গন্ধের লোভে যেমন তুমি প্রায়ই যাও বন্ধুদের নিয়ে আর মধুভরা ফুল ছিঁড়ে কানে গুঁজে দিলে কালো পিঁপড়ে তোমাকে গাছ ভেবে ছোটাছুটি করলো- নাকি তুমিও মানুষের চেয়ে বেশি হয়ে উঠতে চেয়েছো বৃক্ষ! আমার জানা হয়নি আজও।

ভদকায় লেবুনুন মেখে অনেকেই ভাবে, হতো যদি ইকারুসের ডানা- কিন্তু আমি তো জানি আমার ত্বকের নিচেও ঘাপটি মেরে আছে পাথুরে ড্রাগন, সারাদিন ফোয়ারায় ভিজে ভিজে তার দেহ আমার মতই সবুজÑ তাই শীতরাতে বনের আশেপাশে তাবু ফেলে পোড়াতে পারি ডাহুকের হৃদয়।

তোমাকে দিতে পারি কাঠের দেহ অথবা টিয়ের ঠোঁটÑ যদি ফিরে আসো দেহের মাংস ফেলে দু’হাতে করোটি বাজিয়ে। কে আর ডাকবে পেছন থেকে! দেহ ফুরিয়ে গেলে যে নাম থেকে যায় পৃথিবীতে-  বিগত পথে হেঁটে বেড়ায় যদিও সে লোকটা, তবু তার দেহ নয় ছায়া নয়; প্রেমে প্রতারণায় যে বৃক্ষ ছড়িয়েছে শাখা- ধীরে ধীরে আবার তা ঢুকে যায় বীজের অন্ধকারে। 

২.

মাথায় বজ্রবিদ্যুৎ নিয়ে হেঁটে এসেছি আমি, হাটুঅব্দি গলিত পীচ- আমাকে দেশলাই জ্বেলে বিভ্রান্ত করে রাতের মাতাল!

এখানে হেলেঞ্চার বুকে জল সাঁতরায়, হাত বেয়ে উঠে আসে জলঢোঁড়া। আমি তাকে কণ্ঠায় জড়িয়ে রাতের অপেক্ষায় থাকি, পায়ের আঙুল বেয়ে-বেয়ে কখন জলৌকা এসে শুষে নেবে চোখের অসুখ- প্রকৃতির এই নিরাময় কেন্দ্রে আমাকে ঘিরে হাঁটাচলা করে নার্সের মতো সারস আর ঘুমের ওষুধের মতো ডাহুকের স্বর।

চুল ভিজিয়ে দিয়েছে বজ্রবিদ্যুৎজল- যেন কলাপাতা থেকে টুপটাপ গড়িয়ে পড়ছে জোছনার নীল। আমি হাত পা ছড়িয়ে দেই বিষ পিঁপড়ের ঢিবিতে- অনেক বাতরস জমে গেছে তোমায় ডেকে ডেকে।   

আমার তো ঘুম পায় না। কপালে দু’শিরা লাফাতে থাকে টেনিস বলের মতো আর করোটি ফেটে উড়ে যায় কার্পাস তুলো। 

মন্তব্য: