একটি অভিনব স্বপ্ন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

অসীম সাহা

একটি শাদা পায়রার ডানায় ভর করে মধ্যপথে গঙ্গার জলে ঝাঁপিয়ে পড়বো বলে যখন বিমানবাহিনীর প্যারাট্রুপারের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন আকস্মিকভাবে হাওড়ার ব্রীজের ওপরে পায়রাটির যে কী হলো কে জানে! সে ছুটতে লাগলো বাতাসের গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। বৃষ্টিস্নাত রানওয়েতে নামতে না পেরে যেমন করে একটি অসহায় বিমান কেবলি আকাশে চক্কর খায় এবং অভ্যন্তরে শ্বাসরুদ্ধ যাত্রীরা ভয়ের দুলুনিতে চিৎকার করতে থাকে, তেমনি করে কোলকাতা শহরের ওপর দিয়ে আমাদের বিমানটিও ক্রমাগত চক্কর খেতে লাগলো আর আমিও পুরো কোলকাতার আকাশ ফাটিয়ে তারস্বরে চিৎকার করতে লাগলাম। কেউ আমার চিৎকার শুনলো না, হাওড়া এবং শেয়ালদা স্টেশনের ট্রেনগুলো প্রচণ্ড শব্দে ভেঁপু বাজিয়ে ছুটে যেতে লাগলো এদিক-ওদিক। কোলকাতা শহরের বাস, ট্রাম, ট্যাক্সি ও অন্যান্য যানবাহন আমার দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে দ্রুত বেগে ছুটতে লাগলো যে যার গন্তব্যে। আমি তা হলে এখন কী করবো? সাদা পায়রাটির পুচ্ছ ছেড়ে দিয়ে কোলকাতার মধ্যশহরে লাফিয়ে পড়লে নির্ঘাৎ মৃত্যু; অথচ এখন আমার ফেরারও উপায় নেই। তা হলে, আমি কি আমার মৃত্যুকে সঙ্গে করে মহাকালের ঘূর্ণাবর্তের শূন্যতার মধ্যে অনন্তকালের মতো আমৃত্যু ঘুরতেই থাকবো?

আমার প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়েই শাদা পায়রাটি একরাশ ঘন মেঘের আলখেল্লার ভেতরে এমনভাবে ঢুকে গেলো যে, কিছু বোঝবার আগেই 

অস্তিত্বহীনতার ভয়ে আমি আমার চোখ দুটো বন্ধ করলুম। এরপর মহাশূন্যতার ভেতর আরও কী কী ঘটলো এবং আরও কী কী ঘটতে পারে, তা নিয়ে আমার পক্ষে কোনো কিছুই ভাববার অবকাশ রইলো না; কেননা আমি তখনো স্বপ্নের মধ্যে কেবলি দুলছি, কেবলি দুলছি, কেবলি দুলছি।

মন্তব্য: