এখানে রোদেরা নিশ্চুপ, কবিতারা দিকভ্রান্ত
সকালের রোদের আলোকিত আভায় জ্বলে উঠার কথা ছিল। এই খবরে শহরের ফুলগুলো ঝরঝরে তাজা সৌরভে প্রস্তুত, যেন সীমান্ত প্রহরী! এমন মোহনীয় সুসময়ে সুখের বার্তা নিয়ে আসবেন আমাদের বনলতা সেন। এদিকে জীবন বাবু যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতেন তা দেখতে দেখতে পরীরা বড্ড নিশ্চুপ।
আরো কথা ছিল মিরসরাইয়ের নক্ষত্রগুলো বাড়ি ফিরবে যে যার মত। হায়! কী নির্মম পরিহাস, আর ঈশ্বর পলায়নপরায়তা নিয়ে কী ভীষণ নীরব! আমি গতরাতে ঘুমের ভেতর উড়োজাহাজের টিকিট কেটে রেখেছি, ঈশ্বরের কাছে যাব বলে। একথা ও পাড়ার পাগলা কানাইকে বলা মাত্র সে ফিক করে হেসে ফেললে আমি হাসির মানে খুঁজতে গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম দীর্ঘক্ষণ।
কথা ছিল সবাই হাসি আনন্দে থাকবে আপন বলয়ে। কিন্তু মুখ ভার কেনো কৃষক শ্রমিক, তাঁতি জেলের, আমজনতার?
একথা ভাবতে ভাবতে আমি গত দুই দিন কবিতার কথা ভুলে গেছি।
আলো-আঁধারি বাক্যালাপ
ভাসতে-ভাসতে দিগন্তপ্রসারী স্বপ্নগুলো ধূসরতার মাঝে লুটোপুটি খেতে খেতে ক্রমশই তলিয়ে যাচ্ছে, আর আমি যাবতীয় অন্ধকার সরিয়ে আলোতে আসার কী চেষ্টাটাই না করছি।
আমি স্বপ্নশিকারে যাবার আগে যে কিশোরী চোখে চোখ রেখে পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল সেও এই অব্যক্ত বোবাকান্নার মুহূর্তে উধাও।
নিতান্ত অসহায় হয়ে আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে আবুল হাসানের সেই কথাটি- অবশেষে জেনেছি মানুষ একা…
নক্ষত্রের চেয়েও ধ্রুবসত্যকথাগুলো ঝংকারে ঝংকারে অদ্ভুত আলোড়ন তুলছে মননে। আমার ভাবনারা প্রতিক্ষণে মৃত্যুর দরজায় উঁকি মেরেও ফিরে আসছে।
ফিরে আসছে দোকানে ঝুলে থাকা আঙুরের মতো থোকা থোকা স্বপ্ন নিয়ে।