মেরুদণ্ডহীন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

এম. আসলাম  লিটন

একদা আমাদের মেরুদণ্ড ছিলনা।

হাড্ডি-মজ্জা-চর্ম-গ্রীবাদেশ কিছুই ছিলনা 

ছিলনা বলিষ্ঠ দেহ, বজ্রমুষ্ঠি, মাংস, মাংসল পেশি,

আর পেশিতে ছিলনা পাথর ভাঙার বল।

একদা আমরা হাঁটতে পারিনি-

উড়তে পারিনি, 

ছুঁড়তে পারিনি 

দুমড়ে মুচড়ে চুরমার করে ভাঙতে পারিনি কিছুই!

কেবল লালা-পিচ্ছিল শৈবাল হয়ে

ভেসে বেড়িয়েছি; খালে বিলে নদীতে সাগরে

কাল থেকে কালে, অনন্ত মহাকালে…

কী আনন্দ! আহা কী পুলক;

দল বেঁধে সেই জলকেলিকালে!

অতঃপর সময় তরীতে ভাসতে ভাসতে

হাসতে হাসতে

ধাক্কায় ধাক্কায় গড়াতে গড়াতে গঠিত হয়েছে দেহ-

গঠিত হয়েছে মাংস, মাংসল পেশি. রক্তকণিকা।

তারও নিযুত নিযুত কাল পরে, 

দেহলালা দলা-জমাট বেঁধে গঠিত হয়েছে হাড়; 

হাড়ে রগ, রগে বল-

আমরা তখন জল ছেড়ে উঠে এসেছি ডাঙায়

হাঁচড়ে পাঁচড়ে বুক ঠেলে ঠেলে

কুড়িয়ে ফিরেছি স্বপ্নলোকের কণা; 

পরমাত্মার নুড়ি।

আহরণ করেছি ফলার-আহার গন্ধমসম বৃক্ষ   

উন্মুক্ততা ত্যাগ ক’রে ক’রে ঢেকেছি অন্তরিক্ষ।

এভাবে যখনই কারো কারো দেহে

হাড়ের মালা গ্রন্থিত হ’তে হ’তে 

সৃষ্ট হয়েছে শক্ত-সোজা, নতহীন মেরুদণ্ড; 

ঠিক তখনই দণ্ডিত হয়েছে পৃথিবী- 

দ্বিখণ্ডিত হয়েছে ধারা

ত্রিখণ্ডিত হয়েছে আমাদের অস্তিত্ব।

এর একদিকে পক্ষ, আরেক দিকে প্রতিপক্ষ 

মাঝখানে মেরুদণ্ডহীন আমি…!

মন্তব্য: