শঙ্খচূড় ইমাম এর কবিতা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

পাঠ

পৃথিবীর পাঠশালায় জননী পাঠ করে উনুনের তাপদাহে ভাতের হাঁড়িতে বুদবুদ করে ওঠা ফেনের ফিনকি আর পাখিরা পাঠ করে পালক থেকে খসে যাওয়া এক একটা  অক্ষরের ব্যাকরণ। তাদের চোখ ও ঠোঁটের দীর্ঘশ্বাসে আকাশ-বাতাস বোবা হয়, আহা বেচারা পাখি!

অই যে দেখছো ট্যাকে বসা লোকটা; উনি আমার বাপ! অই ব্যাটা পাঠ করে জীবনের মন্ত্র- পোলাডার লাল কোর্তা, মাইয়্যাডার স্নো, কাইল কিস্তি!

পাঠের পৃথিবীতে কেউ কেউ শুধু পাঠই করে, পায় না স্বাদ নুনের। তাই পাঠার মত পাঠ চুকাতে গিয়ে হোঁচট খায় পিচ্ছিল পথে। ভেঙে যায় সংসারের ঘাড়, কেটে যায় দম্ভের ঠোঁট, পা-ুর হয় বেহিসেবি হাঁড়ি। তবু ন্যাড়া কুকুরের মতন লাল জিহ্বা বের করে কিংবা ল্যাংড়া পায়ে দৌঁড়াতে চায় পাঠের বৃত্তে। এ পাঠ চিরকালের। 

এসবের আদলে মৃত্তিকা পাঠ করে ঈশ্বরের দেয়া ক্ষুধার ফুল, ময়নামতির ভেঙে যাওয়া মাটির সংসার, খেটে খাওয়া মানুষের কান্নার শব্দ আর প্রেমের বুকে উল্কা আঁকা প্রেম। পাঠ করে করে জলপাইরঙ মাখে জীবনের খেরো খাতায়, হয় না শেষ এ পাঠ দিনরাতের মিলনের মাঝে; পাঠ চলে পাঠের নিয়মে…

চোখপাথারে

তার চোখপাথারে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ দেখে আমি রূপালি বনে ঘুমোই। ঘুম ভাঙায় মায়াডানা অপ্সরী। তার আয়নায় সাঁতার কেটে কেটে দেখলাম-আমি হিজিবিজি, জলের তলে দোল খাওয়া হাবাগোবা চাঁদ।

অপ্সরীর উঠোন চাই না। দূরে থাক রূপালি ইলিশের ঝাঁক। আমি চাই চোখপাথারে জেগে থাকা লিকলিকে চিকন সবুজ পিটভাইপার। লীন হতে চাই পিটভাইপারের বিছানায়। পিটভাইপার আমাকে দুয়ার খুলতে শিখায়।

মন্তব্য: