আমরা দু’জন
আমরা দু’জন যে পথ দিয়ে গেছি
সেটা ছিল কাওয়ালিদের পথ,
দিনটা ছিল শনি কিংবা রবি
সময় ছিল ফাল্গুনি মাঝরাত।
আকাশ জোড়া শস্য দানা মেঘ
আধাে আলাের জোছনা ধােয়া জল,
তােমার ভেতর যতটা আবেগ
আমার বাহির তারাে চেয়ে প্রবল।
আমরা দু’জন যে গ্রাম ছেড়ে গেছি
সেটা ছিল কাওয়ালীদের গ্রাম
মাঠের মধ্যে গুটিকতেক বাড়ী
একেক জনের একেক জোড়া নাম।
দূরে কোথাও থামলাে লােকাল ট্রেন
হঠাৎ কেপে উঠলাে গােটা মাঠ,
জলের ভেতর ঢেউয়ের তােড়ে তােড়ে
যেমন কাঁপে মাঝ বয়েসী চাঁদ।
আমরা সেদিন যে গান গেয়েছিলাম
সেটা ছিল শান্তিরামের সুর,
আধেকখানি আনন্দ আশ্রম
আধেক ছিল বিয়ােগে ভরপুর।
আমরা দু’জন যে দিন ভুলে আছি
সেদিনগুলাে বড্ড পড়ে মনে,
তােমার মত হারিয়ে গেছ তুমি
আমি ফিরি তোমারি দিন গুনে।
তােমরাই থাকো আমি যাই
তাহলে তােমরাই থাকো আমি যাই
এই কাটখােট্টা সময় বন্ধ্যা জমিনে
আর কোন শস্য ফলাবে না হয়তাে
আর কোন জোছনার জল জাগাবে না কানদিন
মানবের স্বপ্ন সােফেন হয়তাে।
তাহলে তােমরাই থাকো আমি যাই
এখনাে যেটুকুন পথ আছে বাকি
এখনাে যেটুকুন রাত আছে বাকি
একাকী নির্জন পায় সুনসান এগােনােই ভালাে।
যদি দেশের ওপারে দেশ থাকে
যদি রাতের ওপারে রাত থাকে
যদি মেঘের ওপারে থাকে মেঘ
কোন এক শস্যদানার উৎসবে ফের দেখা হবে হয়তাে।
সেদিন চোখের মন্দিরে চোখ
সেদিন বুকের বন্দরে বুক
সেদিন হাতের অন্দরে হাত রেখে
আবার গাইবে সবাই সামর্থের গান হয়তো।
আবার এক সাথে দাঁড়াবে মানুষ-মানুষের মাঝে
আবার এক সাথে মেলাবে মানুষ-মানুষের মাঝে
আবার এক সাথে হাঁটবে মানুষ-মানুষের মাঝে হয়তাে।
তাহলে তােমরাই থাকো আমি যাই
প্রতিটি উত্তরে প্রতিটি দক্ষিণে
প্রতিটি পশ্চিম প্রতিটি পূর্ব কোণে
হেঁটে হেঁটে খুঁজে আনি
নিরঙ্কুশ সেই সময়।
তােমরাই থাকো- আমি যাই।