আরেকদিন চিত্রায় অবগাহনে

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

মাজহারুল হক লিপু

বলটা গড়িয়ে পায়ের দিকে আসতে দেখেই লিখন উঠে দাঁড়ালো।  একটু এগিয়ে গিয়ে ডান পায়ের উপর শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে লাথি দেয়ার চেষ্টা করলেও খুব জোর হলোনা কিকে। মাঠের মধ্যে যেসব ছেলেরা খেলা করছিল তাদের মধ্যে একজন ঘাম মুছতে মুছতে দৌঁড়ে এসে বলটি  কুড়িয়ে নিয়ে থ্রোয়িং করলো। লিখন আবার পিছিয়ে গিয়ে বটগাছের নিচে বসে খেলা দেখতে লাগলো। খেলা দেখতে লাগলো বললে বোধহয় ভুলই হবে। যতখানি মন তার খেলাতে তার চেয়েও বেশি তা ফিরে যাচ্ছিল কুড়ি বছর আগের স্মৃতিতে। খুব ভালো খেলোয়ার ছিলনা সে। তবে খেলত নিয়মিতই। স্কুল দলের পনের জনের মধ্যে সবসময়ই সুযোগ হত তার।  বেষ্ট ইলেভেনেও সুযোগ পেয়েছে আট দশটি ম্যাচে। তাইবা কম কিসে।

কি একটা বিষয় নিয়ে যেন ছেলেগুলোর মধ্যে হট্টগোল চলছে। আপাতত খেলা বন্ধ। লিখনের খুব মনে পড়ছে সেই সময়কার কথা । ওদের স্কুলের খেলা থাকলে এরকম হট্টগোল বাঁধত মাঝে মধ্যেই। ওদের স্কুলে খুব মেধাবি শিক্ষার্থীরা পড়তনা। যারা পড়ত তাদের মধ্যে বেশ মাস্তান গোছের ছেলে ছিল কিছু। ক্লাসে আসুক বা না আসুক স্কুলের খেলা থাকলে ঠিক উপস্থিত হত তারা। রেফারির ডিসিশনে একটু এদিক ওদিক হলেই বাধিয়ে দিত হইচই। বিশেষ করে জিলা স্কুলের সাথে খেলা থাকলে তা যেন হয়ে উঠত আবাহনী মোহমেডানের ম্যাচের মত উত্তেজনার। । নিরঞ্জন, শামীম আর লিখন ঘনিষ্ট বন্ধু হলেও শামীম ছিল জিলা স্কুলের গেলকিপার। নিরঞ্জন ছিল লিখনদের স্কুলের ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন। একবার ওদের সাথে এক ম্যাচে পেনাল্টি কিক পেয়ে যায় লিখনরা। নিরঞ্জনকে কিক নিতে দেয়া হয়।নিরঞ্জনের কিক মানেই নিশ্চিত গোল। সেকি আনন্দ ছাত্রদের। এই ম্যাচ জিতলেই খুলনা যাবে বিভাগীয় পর্যায় খেলতে। দর্শকের চিৎকারেরর মাঝে নিরঞ্জন কিক নিল এবং বলটি গোল পোষ্টের দুই হাত উপর দিয়ে মাঠের বাইরে গিয়ে পড়ল। ঐ ম্যাচে হেরে গিয়েছিল লিখনরা। স্কুলে ফিরে নিরঞ্জনকে বেত দিয়ে প্রচন্ড মেরেছিল গেম টিচার ইদ্রিস স্যার। বাড়িতে ফিরতে ফিরতে নিরঞ্জন লিখনকে বলেছিল, ‘কাউকে বলিসনা, শামীম যখন আমার সামনে একা গোলপোষ্টে দাঁড়িয়ে ছিল তখন ওর চোখের দিকে তাকেিয় আমার খুব মায়া হচ্ছিল তাই বোধহয় আমি কিকটা গোলপোষ্টে মারতে পারিনি।’

মাঠে আবার খেলা শুরু হয়েছে। বোধহয় সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। লিখন প্রায দুই ঘন্টা কাটিয়ে দিল এই বটগাছের নিচে। গত দুইদিন আগে সে যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নড়াইলে যাবে তখন থেকেই ভিতরে তাড়া অনুভব করছে  কখন ভিক্টোরিয়া কলজের মাঠের ধারে ঐ গাছটার নিছে একটু বসবে। সেই স্কুল জীবন থেকেই এই গাছের সাথে ওদের সখ্যতা। ওদের বলতে লিখন , শামীম আর নিরঞ্জন। বিকালে এই মাঠে প্রাকটিসে নামার আগে এবং প্রাকটিস সেরে বসত এই গাছের নিচে। সবাই বাড়ি যাওয়ার পর ওরা তিনজন চিত্রা নদিতে গোসল সেরে তারপর বাড়ি ফিরত। কোনদিন একটু রাত হয়ে গেলে মায়ের বকুনি শুনতে হতো। লিখন থাকত মামা বাড়িতে। ছোট বেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর বড় মামা লিখন আর ওর মাকে মামা বাড়িতে নিয়ে আসে। লিখনের মা একটা স্কুলে চাকরিও পেয়ে যায়। মা বকুনি দিলেও লিখনের মামা মামী ওর পক্ষেই থাকত। বোধহয় লিখনের উপর আস্থা ছিল প্রবল। খুব ভালো রেজাল্ট না করলেও পাঁচের বেশি রোল তার কখনো হয়নি।

সূর্য  সিঁদুর রঙ ধারণ করে প্রায় ম্লান হতে চলেছে পশ্চিম আকাশে। ছেলেগুলো খেলা শেষ করে মাঠের মধ্যে বসে বিশ্রাম নিচ্ছে। ওরা কেউ বোধহয় বটগাছটার নিচে বসেনা। লিখনকেও উঠতে হবে এখন। নিরঞ্জনের বাড়িতে যেতে হবে। ভোরে নড়াইল পৌছে মামার বাড়িতে  ঘণ্টা তিনেক বিশ্রাম  নিয়েই  ছুটে গিয়েছিল নিরঞ্জনের বাড়িতে। অনেক বদলে গেছে বাড়িটা। নিরঞ্জনের বাবা নলিনীকান্ত বাবু ছিলেন হেমিওপ্যাথি ডাক্তার। খুব স্বচ্ছল না হলেও বাড়িতে ঢুকলে খুব অভাবি বলে মনে হতনা। প্রতি বছর পূজায় লিখন আর শামীমকে দাওয়াত করতেন তিনি । লুচি, তরকারি, মিষ্টি আরো কত কি যে তৈরি করতেন কাকিমা । এখন বাড়িটা দেখলেই বোঝা যায় বহুদিন কোন সংস্কার করা হয়নি তা। সকালে নিরঞ্জন বের হচ্ছিল চেম্বারের চাবি নিয়ে। চেম্বার মানে ওর বাবার হোমিওপ্যাথির চেম্বার। বাড়ির সামেনেই। বাবা মারা যাওয়ার পর নিরঞ্জনই বসছে। ববার মত পসার নেই তার। তবু সে ছাড়েনি এই পেশা। লিখনকে দেখেই কেমন অবাক হয়ে যায় সে। লিখন এগিয়ে এসে পুরনো বন্ধুকে আলিঙ্গন করতে চাইলেও সে কেমন এক দরত্ব বজায় রাখতে চায়। তারপর চিৎকার করে ওঠে, ‘মা দেখ কে এসেছে’। ঘর থেকে বের হয় সিঁদুর পরা সদ্য কৈশর উত্তীর্ণ এক তরূণী । লিখন বুঝতে পারে এটি নিশ্চয় নিরঞ্জনের বউ। পরিচয় করিয়ে দিতেই  বলে ‘ও আপনার কথা ও সব সময় বলে’। তারপর লিখনকে নিয়ে মায়ের ঘরে ঢোকে নিরঞ্জন। বৃদ্ধা মা অনেকক্ষন তাকিয়ে থেকে চিনতে চেষ্টা করে কিন্তু পারে কিনা কে জানে। লিখনও এক দৃষ্টিতে দেখে পরিবর্তন। মাত্র বিশ বছরের ব্যবধানে বাড়ির কত্রী কেমন নির্বাক বোঝা হযে যায়। লিখনকে দেখে বোধহয় নিরঞ্জন ফিরে গিয়েছিল সেই শৈশবে নইলে কিভাবে ভুলে গেল যে তার মা এখন নির্বাক, শয্যাশায়ী। নিরঞ্জনের  স্ত্রী পূর্ণিমা উঠানে দুটি টুল পেতে দেয়। তাতে নিরঞ্জন বসেনা। বউকে ডাক দিয়ে ফিসফিস করে কি যেন কানাকানি করে। তারপর  লিখনের সামনে  এসে  বলে, ‘আমি একটু চেম্বারে যাচ্ছি। কয়েকজন রোগি এসেছে। তুই পূর্ণিমার সাথে কথা বলে আয়’। পূর্ণিমা  এসে টুলে বসে শুরু করে গল্প। শুধুই অভাবের গল্প। শুনতে ভালো লাগেনা লিখনের। তবু শুনতে হয়। এক পর্যায়ে পূর্ণিমা বলতে থাকে শামীমের কথা। ঈদে যখন শামীম বাড়ি আসে নিরঞ্জন এখনো নিজে গাছে ইঠে ডাব পেড়ে দিয়ে আসে  শামীমের বাড়িতে। অথচ শামীম একটি বারের জন্যও আসেনা নিরঞ্জনের বাড়িতে।  লিখনের মনে পড়ে কয়েকদিন আগের কথা। শামমীমের সাথে দেখা হয়েছিল মগবাজারে। ও এখন একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর কান্ট্রি ডিরেক্টর। লিখনকে দেখেই গাড়ি থামিয়েছিল। নিরঞ্জনের কথা জিজ্ঞাসা করতেই বলেছিল,ভালো আছে, বাড়িতে গেলেই নাকি, সে দেখা করে নিরঞ্জনের সাথে। আজ পূর্ণিমার কথা শুনে অবাক না হয়ে পারেনি। পূর্ণীমা লিখনকে রাতে একসাথে খাওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। এবার বোঝা গেল নিরঞ্জন বউয়ের কানেকানে কি কথা বলছিল। বাড়ির সামনেই বাবার চেম্বারে নিরঞ্জন তখন রোগি দেখায় ব্যস্ত। সামনে গিয়ে লিখন গলাটা বাড়িয়ে দিয়ে বলে , যাইরে-সন্ধ্যায় দেখা হবে। নিরঞ্জন শুধু বলে, ‘তাড়াতাড়ি আসিস, আমি অপেক্ষায় থাকব’।

সনন্ধ্যা লেগে এসেছে প্রায়। ভিক্টেরিয়া কলেজের মাঠ প্রায় ফাঁকা। দূর থেকে আওয়াজ ভেসে আসছে কোন নাটকের দলের রিহার্সেলের। লিখনকে রাতেই ফিরতে হবে ঢাকায়। আবার সেই অফিস, কোলাহল আর যানজট। শুক্রবার বলে কাউকে বলেও আসেনি সে। কাল সকালে পৌছাতেই হবে অফিসে। তাই প্রথম কাজ আগে টিকেট কাটা। কলেজ থেক বের হয়ে হাঁটতে থাকে সে। রূপগঞ্জের কয়েকটা পরিচিত মিষ্টির দোকান চোখে পড়ে। দোকানগুলোকে এখন আর চেনা যায়না। আগে এসব দোকানে টিনের ঝাঁপ তোলা হত দুপাশে বাশ দিয়ে। এখন সব দোকানেই সাটার লাগানো এবং ভিতরে টাইলস করা। কিছু মিষ্টি আর দই নিতে হবে মায়ের জন্য। লিখনের মা গত দশ বছর আগে রিটায়ার করে লিখনের সাথে ঢাকাতেই থাকে। ঢাকার মিষ্টি দেয়া হলেই লিখনের বউ পাপিয়াকে বলে, বউমা তুমি যদি নড়াইলের মিষ্টি আর দই একদিন খেতে তাহলে আর এই মিষ্টি খেতেই চাইতেনা। পাপিয়ারও ইচ্ছা একদিন নড়াইলের মিষ্টি আর দই খাবে। বাসে ওঠার আগে কিনে নিতে হবে। কাউন্টার থেকে আগে হানিফ পরিবহনের টিকেট নিয়ে নেয় লিখন। রাত ১১ টায় গাড়ি। এবার রিকশা নিয়ে সোজা নিরঞ্জনের চেম্বারের সামনে গিয়ে যখন দাঁড়ায় তখন ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে সাতটা । নিরঞ্জন তখন চেম্বার বন্ধ করছে। 

এত সকাল সকাল বন্ধ করিস প্রতিদিন ?- লিখনের এ প্রশ্নের জবাবে নিরঞ্জন লাজুক হাসি দিয়ে বলে , ‘আটটা পর্যন্ত থাকি। আজ তুই এসেছিস তাই………..’।  কথা বলতে বলতে বাড়ির ভিতর ঢোকে দুজন। উঠানের উপর সকালের টুল দুটো এখনো তোলা হয়নি। লিখনকে সেখানে বসতে বলে ভিতরে যায় নিরঞ্জন। কিছুক্ষণ পর একটা লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি গায়ে দিয়ে বের হয়ে আসে। কলপাড়ে গিয়ে হাতমুখ ধুঁয়ে টুলে এসে বসে। লিখন একে একে শুনতে থাকে সবার খবর। বন্ধুরা কে কোথায় আছে, মেয়েদের মধ্যে কার কোথায় বিয়ে হয়েছে নানা প্রশ্ন  লিখনের। নিরঞ্জন কোনটার জবাব দেয় কখনো চুপ করে থাকে। বোঝা যায় সবার খবর সে রাখেনা। একসময় পূর্ণিমা এসে ওদের খেতে যেতে বলে। কয়েক রকম মাছ, মুরগির মাংস আরো কয়েক রকম নিরামিশ রান্ন্া করেছে পূর্ণিমা। বোঝা যায় অভাবের সংসারেও বাজার করতে গিয়ে কার্পণ্য করেনি নিরঞ্জন। খাওয়া শেষে আবার উঠানে বসে লিখন। কিছুক্ষণ পর নিরঞ্জন ঘর থেকে বের হয় কাঁধে একটা ঝোলা নিয়ে। ঝোলার দিকে তাকিয়ে লিখন কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিরঞ্জন ওর সামনে এসে বলে ,‘ চল বের হই’। পিছনেই পূর্ণিমা এসে দাঁড়ায়। লিখন পূর্ণিমার কাছ থেকে বিদায় নিতে নিতে খেয়াল করে নিরঞ্জন  তার বাইসাইকেল বের করছে। এটা কি সেই সাইকেলটাই। দেখেতো তাই মনে হয় । লিখন জিজ্ঞাসা করার আগেই নিরঞ্জন বেল বাজিয়ে বলে, ওঠ পিছনে।

তীব্র গতিতে সাইকেল চালাচ্ছে নিরঞ্জন। পিছনে ক্যারিয়ারে বসে লিখন। নড়াইল শহরের এ গলি ও গলি কোথাও বাদ নেই। যেন সেই ক্লাস সেভেনে ফিরে গেছে ওরা। একটু অবসর পেলেই নিরঞ্জন লিখনকে নিয়ে বের হয়ে পড়ত সাইকেলে। শহরের সবাই চিনত ওদেরকে। এখন কেউ চিনতে পারছেনা লিখনকে। মোড়ে মোড়ে যেসব ছেলেরা আড্ডা দিচ্ছে কাউকেই চেনেনা লিখন। দুএকজন ঘুরে নিরঞ্জনকে দেখছে। সাইকেলটা এবার সোজা ঢুকে পড়ে ভিক্টোরিয়া কলেজে। এবার বোঝা যায় চমৎকার চাঁদ উঠেছে আজ আকাশে। মাঠের মধ্যে আলো যেন বৃষ্টির মত ভিজিয়ে দিচ্ছে ওদেরকে। সাইকেলটা ঠিক বটগাছটার সামনে থামায় নিরঞ্জন। দুজনে বসে পড়ে গাছের নিচে। নিরঞ্জন পকেট থেকে বেনসন সিগারেটের একটা প্যাকেট বের করে সামনে ধরতেই লিখন খেয়াল করে ভিতরে পাঁচটি সিগারেট। ‘তুই সিগারেট খাস? ’ লিখনের এ প্রশ্নে নিরঞ্জন উত্তর দেয় না কোন।  ‘তোর জন্যই কিনলাম। তুই লুকিয়ে খেতি। সবার সামনে কিনতে সাহস পেতিনা তাই আমাকে দিয়ে কিনিয়ে আনতি’। লিখন এবার হাসতে থাকে। 

‘শামীমের খবর জানিস কিছু ?’ নিরঞ্জনর প্রশ্ন করে। 

‘দেখা হয়েছে ঢাকায় দুএকবার। কেন নড়াইলে আসেনা ?’ সিগারেটে টান দিতে দিতে পাল্টা প্রশ্ন করে লিখন

‘আসে খুবই কম। তবে এলেই দেখাহয় ’।  লিখন অবাক হয় নিরঞ্জনের কথায়। কোন অভিযোগ নেই তার শামীমের প্রতি। আথচ পূর্ণিমার কাছেই শামীমের ব্যাপারে জেনেছে সব।

চল এবার চিত্রার পাড়ে যায়- বলতে বলতেই সাইকেলটাতে উঠে পড়ে নিরঞ্জন। ভিক্টোরিয়া কলেজের সামনেই সান বাধানো ঘাট। সাইকেল রেখে দুজনে এসে বসে সিঁড়ির উপর। লিখন অবাক হয়ে দেখে চিত্রার সৌন্দর্য্য। এখনো চিত্রায় এরকম স্রোত বয়ে যায়! স্রোতের উপর চাঁদের আলো কেমন চিকচিক করে পড়ছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দশটা প্রায় বেজে এসেছে। এখনো অনেক কাজ বকি। মিষ্টি কেনা, মামার বাড়িতে দেখা করে ব্যাগটা নিয়ে আসা। দেখতে দেখতে কিভাবে কেটে গেল একটা দিন। 

‘নে লুঙ্গিটা পড়ে নে’- নিরঞ্জনের কণ্ঠ শুনে একটু কেঁপে ওঠে লিখন। ‘গোসল করবিনা? এত সুন্দর চাঁদ?’ কথাগুলো বলতে বলতে ঝোলা থেকে আরো একটি লুঙ্গি বের করে পরে নেয় নিরঞ্জন। তারপর একটু পিছনে গিয়ে দৌঁড়ে এসে ঝাপ দেয় চিত্রার জলে। লিখনও দেরি করেনা। লুঙ্গি পরে নিয়ে একই ভাবে দৌড়ে এসে ঝাপ দেয়। যেন সেই স্কুলের জীবন। তারপর দুজনে ডুব দেয়, আবার ওঠে। আবার ডুব দেয়, আবার ওঠে। আবার সাঁতরে চলে যায় বহূদূর। চাঁদও যেন আরো এগিয়ে এসে খেলা কর্ েওদের সাথে। এগারোটায় গাড়ি ছাড়বে তা যেন ভূলেই গিয়েছে লিখন। ওরা দুজন সাঁতরাতে থাকে। বহূ দূরে যায়্ বহূ দূরে। 

মন্তব্য: