বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের বৈশাখ

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

তুষার প্রসূন

যা কিছু পুরনো সেসব বিদায় দিয়ে বৈশাখ সাড়ম্বরে বরণ করে নতুনকে। প্রচণ্ড ঝড় নিয়ে এসে বৈশাখ বিদায় নেয় ধ্বংসের সহযাত্রী হয়ে। বৈশাখ সবসময় সাহসী, ক্ষ্যাপা, বৈরী, অশান্ত, অসীম, নির্দয় কিন্তু তার সৃজনক্ষমতা শিল্পীর নিপুণ আল্পনাকেও হার মানিয়ে দেয়, তার নবায়নী ধারা প্রকৃতিকে ঋদ্ধ করে অপার ব্যঞ্জনায়। মানুষ তখন ভেবে পায় না তাদের মনে কেন এত নবআনন্দের জোয়ার, কেন এত নতুন লাগে নিজেকে! সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও আমাদের মাঝে এলেন এক বৈশাখে, প্রেম, প্রকৃতি আর মানুষের জয়গান সাথে করে, বাংলাকে পূর্ণতা দিতে।

‘বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ’ প্রাসঙ্গিক না কি ‘রবীন্দ্রনাথের বৈশাখ’ নিয়ে আলোচনা করা প্রাসঙ্গিক তা একজন বাঙালীর পক্ষে নির্ণয় করা কঠিন। তারপরও প্রথমে দেখা যাক ‘বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ’ এর ভূমিকা নিয়ে। ঋতুবৈচিত্রের বাংলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সকল মাসকেই উপস্থাপন করেছেন অনন্য বৈশিষ্ট্যে। বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখ সেই বৈচিত্রেরই একটা অংশ যা মানুষের মাঝে তিনি উপস্থাপন করেছেন বিশেষ দর্শন বা উদ্দেশ্য সামনে রেখে।  বৈশাখ ও বাঙালী সংস্কৃতি অভিন্ন ক্যানভাসে চিত্রিত বাঙালীর উৎসব। বাড়ির পাশের শিশির বিন্দু থেকে শুরু করে  পৃথিবীর পথে পথে রবীন্দ্রনাথ যত অব্যক্ত ভাব অনুভব করেছেন তিনি তা-ই নান্দনিক ভাষায় মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। কোনকিছুই যেন তার দৃষ্টিকে অগ্রাহ্য করেনি। বাঙালী ঐতিহ্যের প্রাচীনতম ধারাবাহিকতায় বাউল, জারি-সারি, কীর্তন আবহমান কাল ধরে বাংলার হাটে-মাঠে-ঘাটে চলে আসলেও বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাবের পর ঋতুবৈচিত্রের ধারাবাহিকতায় বয়ে আসা বৈশাখ উৎযাপন অনেকটা বদলে গ্যাছে। বলা যায় রবীন্দ্রনাথ বৈশাখে জন্মেছিলেন বলেই হয়তো তার এই মাসটির প্রতি রয়েছে বিশেষ টান অন্যদিকে ঋতুবৈচিত্রের এই বাংলায়, বাঙালীর আবহমানকালের প্রথাগত সংস্কৃতি- পুরনোকে পেছনে ফেলে নতুনকে বরণ করার নতুনতর দাবি নিয়ে বৈশাখ আসে বলেই বাংলা সনের প্রথম মাসটি কবির এত প্রিয়। পৃথিবীর সকল বাঙালী বর্ষবরণের সাথে একাত্ম হন বৈশাখের আনন্দমেলায় অর্থাৎ যে যেখানেই থাকুক না কেনো নতুন বছরের সূর্যালো সবাইকে নতুন করে রাঙিয়ে তোলে। ফলে ১লা বৈশাখ জনপ্রিয় হতে হতে তা এখন স্থায়ীভাবে উৎসবে রূপ নিয়েছে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে যদিও আনুষ্ঠানিকতার কিছুটা তারতম্য দেখা যায় তবে সকলের বুকে থাকে একই আশা, মুখে চলতে থাকে বর্ষবরণের অভিন্ন গান। বৈশাখ পালনের বিভিন্ন রকম আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজের মতো করে পালনের মাধ্যমে দিনটিকে আরো মহিমান্বিত করেছেন যার ধারাবাহিকতা আমরা এখনও কণ্ঠমিলিয়ে স্মরণ করি দৃঢ়তার সাথে।

নববর্ষ উদযাপন উনবিংশ শতাব্দীর গোড়াতে হলেও (১৯১৭) তা জনপ্রিয় হতে অনেক চড়ায় উৎরায় পার হতে হয়েছে। স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশে পাকিস্তানি শাসকরা বারবার বাঙালী সংস্কৃতিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। তার অংশ হিসেবে সে সময় রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতা প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং তারই প্রতিবাদে ১৯৬৫ সালে ঢাকার রমনা পার্কের বটমূল বা অশ্বত্থমূলে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আয়োজন করে আসছে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ছায়ানট’। উল্লেখ্য যে, সংগঠনটি এখন বাঙালী সংস্কৃতির মহিরুহে রূপ নিয়েছে আর বৈশাখ বরণে বাড়তি রঙ লাগিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের ২০-এ ফাল্গুনে রচিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো…’ গানের মধ্যে দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছিলো বৈশাখকে, যে ধারা আজও অব্যাহত। কাহারবা তালের এই গানটি রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতিভাবনার নিপুণ এক নির্মাণ। গানটিতে সুর ও বাণীর অপূর্ব মেলবন্ধন থাকায় তা বাঙালীচিত্তকে একসুতোয় গেঁথে রেখেছে। উল্লেখ্য যে, ১৯৭২ সাল থেকে বৈশাখী উৎসব মূলত জাতীয় উৎসব হিসেবে স্বীকৃতি পায়। উৎসবটিকে আরো মহিমান্বিত করতে ১৯৮০ সাল থেকে শুরু হয় বৈশাখী শোভাযাত্রার। আজ এই গান ও শোভাযাত্রা যেন বাংলার প্রতিটি মানুষের মনের গান, প্রাণের পার্বণ। বৈশাখ এলেই আমরা অনুভব করি অসাম্প্রদায়িক এই সাংস্কৃতিক উৎসব কতোটা শক্তিশালী।

রবীন্দ্রনাথের বৈশাখী গানের ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নি¯œানে সূচি হোক ধরা’ চরণটি যেন সমস্ত বাঙালীর প্রাণের কথা হয়ে ধরা দিয়েছে। কবি চেয়েছেন মৃত, পচা, জরা, ব্যাধি সবই বৈশাখী বাতাসে উড়িয়ে দিতে, চেয়েছেন অগ্নিস্নানে সবকিছু সুচিস্নিগ্ধ করতে। তিনি বৈশাখী ঝড়ের তা-বে সবকিছু ভাসিয়ে দিয়ে মেতে উঠতে চেয়েছেন নবসৃষ্টির আনন্দে। শুধু একটি গানেই নয় তিনি ‘কল্পনা’ কাব্যের ‘বৈশাখ’ কবিতায় লিখেছেন- ‘হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ/ ধুলায় ধূসর রুক্ষ উড্ডীন পিঙ্গল জটাজাল/ তপ্তঃক্লিষ্ট তপ্ত তনু, মুখে তুলি বিষান ভয়াল/ কারে দাও ডাক-/ হে ভৈরব হে রুদ্র বৈশাখ?/ এছাড়া বলাকা কাব্যের ছবি কবিতায় তিনি লিখেছেন, ‘এই ধুলি/ ধূসর অঞ্চল তুলি/ বায়ুভরে ধায় দিকে দিকে/ বৈশাখে সে বিধবার আভরণ খুলি/ তপস্বিনী ধরণীরে সাজায় গৈরিকে।(ছবি/ বলাকা)

পৃথিবীতে খুব কম জাতির নিজস্ব নববর্ষ, ভাষা, বর্ণমালা, ষড়ঋতু আছে, আছে বাউল জারি-সারি ভাটিয়ালী সমৃদ্ধ নিজস্ব সংস্কৃতি। এমনি আনন্দ আয়োজনের মধ্যে বর্ষবরণের বিশেষ অসাম্প্রদায়িক দিক থাকার কারণে আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারি নির্দ্বিধায়। যার জন্য সমগ্র বাঙালী এই বিশেষ একটি দিনের জন্য এক বছর অপেক্ষায় থাকে। দিনটিকে ঘিরে আছে নতুন জামা, পান্তা-ইলিশ সহ মজাদার খাবারের মেলা, মঙ্গল শোভাযাত্রা সহ গান, নাটক, যাত্রাপালা দেখার মতো অগনণ আনন্দ আয়োজন। আর এসবের চারপাশ ঘিরে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাকে ছাড়া আজ আর বাঙলা নববর্ষ কল্পনা করা যেন অর্থহীন। এছাড়াও দেশাত্নবোধক গানের পাশাপাশি রবীন্দ্রসঙ্গীতই আমাদের মনকে শেষ পর্যন্ত দোলা দেয়। এভাবেই বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ বাঙালী সংস্কৃতিতে লীন হয়ে আছেন। উৎসব প্রসঙ্গ আসলে একটি কথা না বললেই নয়, তা হলো কর্পোরেট-হিন্দি-ইংরেজী সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে নইলে অদূর ভবীষ্যতে নিজস্ব সংস্কৃতি হুমকির মুখে পড়বে।

এবার আসা যাক ‘রবীন্দ্রনাথের বৈশাখ’ প্রসঙ্গে। বলা হয়েছিলো বৈশাখ মাসে যেহেতু রবীন্দ্রনাথের জন্ম (২৫শে বৈশাখ ১২৬৮ সাল, বাংলা) তাই কবির রয়েছে বৈশাখ মাসটির প্রতি একটু বিশেষ টান ফলে তিনি অনেক কবিতা ও গানে বৈশাখ মাসকে তুলে ধরেছেন বিভিন্ন আঙ্গিকে। যদিও ১৯৩৬ সাল থেকে বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন প্রবর্তিত হয়। ফলে বর্ষবরণ কিংবা জন্মদিনবরণ একটি ভিন্নরূপ লাভ করে। রবীন্দ্রনাথই যে শুধু রচনা করে গ্যাছেন তাই নয় রবীন্দ্রনাথকে নিয়েও যে কত গান-কবিতা-ভাষণ রচিত হয়েছে তার ঠিক নেই। বিশিষ্ট রবীন্দ্র-বঙ্কিম গবেষক অধ্যাপক অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, ‘বাঙালীর গর্বিত সংস্কৃতির ইতিহাসে বেঁচে আছে দু’তিনটি বাংলা তারিখ, ১লা বৈশাখ, ২৫ শে বৈশাখ, ২২ শে শ্রাবণ, ৭ই পৌষ (শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যপ্রাচীন পৌষমেলা)। এর মধ্যে তিনটিই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাপুরুষটিকে ঘিরে।’ প্রবন্ধকার অনুত্তম ভট্টাচার্য লিখেছেন, ‘বিশ্বপথিক রবীন্দ্রনাথ রেলের কামরায়, বাদুরঝোলা বাসের ইঞ্জিনের কভারে, গঙ্গাবক্ষে, নৌকা-লঞ্চের পাটাতনে, কি রুদ্র বৈশাখের খররৌদ্রে, পিচগলা রাজপথে, ভ্রাম্যমাণ বাঙালীর সঙ্গে সঙ্গে ফেরেন মাল্যে-পুষ্পে ধূপে-গানে-আবৃত্তিতে-অভিনয়ে অভ্যর্থিত হতে হতে।’

রবীন্দ্রনাথের জীবনের প্রথম দিনগুলোতে ২৫শে বৈশাখ তেমন জাকজমকভাবে পালিত হয়নি। তাঁর ২৫ বছর বয়সে জন্মদিন পালনের কথা জানা যায়। একটি চিঠিতে তিনি তাঁর বন্ধু ও সাহিত্য সমালোচক শ্রীশচন্দ্র মজুমদারকে লিখেছিলেন, ‘আজ আমার জন্মদিন-পঁচিশে বৈশাখ-পঁচিশ বছর পূর্বে এই পঁচিশে বৈশাখে আমি ধরণীকে বাধিত করতে ধরণীতে অবতীর্ণ হয়েছিলুম, জীবনে এখন আরও অনেকগুলো পঁচিশে বৈশাখ আসে এই আশীর্বাদ করুন।’ এরপরও যে তার জন্মদিন খুব আনুষ্ঠানিকতার সাথে পালিত হয়েছে এমন নয়। তাঁর বহু জন্মদিন ঠাকুরবাড়ির আঙিনাতেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাঁর জীবনে বিদেশ ভ্রমণ অনেকটা সময় দখল করে থাকায় তাকে অনেক সময় বিদেশেও জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে হয়েছে। ১৯১০ সালে রবীন্দ্রনাথের পঞ্চাশ বছর বয়সে পদার্পণ উপলক্ষে প্রথমবারের মতো খুব সাড়ম্বরে তার জন্মদিবস পালিত হয়। এছাড়া ১৯২১ সালে কবি ইউরোপ আমেরিকা ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরলে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের মাধ্যমে তার জন্মোৎসবে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সে সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ রায় বাহাদুর। অনুষ্ঠানে দুটি সংবর্ধনা গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছিলো, যেখানে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে লিখেছিলেন ন্যুট হামসুন, হ্যারল্ড ল্যাসকি,আইনস্টাইনের মতো মনীষীরা। ১৯৩১ সালে কবির ৭০তম জন্মজয়ন্তীও সাড়া ফেলে, সেখানে উপস্থিত ছিলেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সি.ভি রমণ, বিধান রায়, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, রাজশেখর বসু, নজরুল ইসলাম, ইন্দিরা দেবী, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, প্রশান্ত মহলানবীশ প্রমুখ বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ।

কবি কখনই চাইতেন না তার জন্মদিন সাড়ম্বরে পালিত হোক আবার প্রত্যাখ্যানও করবেন সে উপায়ও ছিলো না। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও সাহিত্য সমালোচক স্যার যদুনাথ সরকারকে তিনি একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘এই সমস্ত বাহ্য আড়ম্বরের উদ্যোগ আয়োজনে আমি যে কিরূপ সঙ্কোচ অনুভব করিতেছি তাহা অন্তর্যামীই যানেন।’ কবি জীবনে অনেক সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন তাই তিনি ১৯৩৫ সালের একটি অভিভাষণে বলেছেন, ‘আমার শেষ কথা বলে যাচ্ছি-সম্মানের জন্যে আমার মনে ক্ষুধা নেই। আমি অনেক পেয়েছি, যা প্রাপ্য নয় তাও পেয়েছি। প্রয়োজন আছে মানুষের সৌহাদ্য, প্রীতি। সেটা কেউ ত্যাগ করতে পারে না। এবং সেটা পেলে খুশী হবো না এমন কথাও বলতে পারি না। এই দুর্মূল্য, এই অকৃত্রিম প্রীতি দুর্লভ- এ জিনিস জীবনে যে পাইনি তা নয় কখনও কখনও তা পেয়েছি।’ (অভিভাষণ ৫ই মে ১৯৩৫)। কবিগুরুর জীবনে শেষ জন্মতিথি পালিত হয় ১৩৪৮ (৫ই মে ১৯৪১) সালের পঁচিশে বৈশাখ। পারস্য, রাশিয়া, চীন, জাপান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এলো অভিনন্দন বার্তা, প্রশংসা অথচ শান্তিনিকেতনের আঙিনায় এক অনাড়ম্বর পরিবেশে কবি তার কবিতায় ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন চরম ক্ষণের, 

‘আমার এ জন্মদিন মাঝে আমি হারা 

আমি চাহি বন্ধুজন যারা 

তাহাদের হাতের পরশে 

মর্ত্যরে অন্তিম প্রীতিরসে 

নিয়ে যাবো জীবনের চরম প্রসাদ,

নিয়ে যাবো মানুষের শেষ আশির্বাদ।’ 

রবীন্দ্রনাথ বিভিন্নভাবে বিভিন্ন রঙে আমাদের রাঙিয়ে গ্যাছেন। তিনি নিয়েছেন যত দিয়েছেন তারও বেশী তাই তার কাছে আমরা চিরঋণী। বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের বৈশাখ দুটি অভিন্ন বিষয় বলা যায় একে অপরের পরিপূরক। বৈশাখ এলেই রবীন্দ্রনাথ এসে যায় আবার রবীন্দ্রনাথ মানেই  কবিতা, নাচ, আর ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ সহ অজস্র মনোমুগ্ধকর গান। ষড়ঋতু আর রবীন্দ্রনাথ আমাদের সাথে নিয়ে যুগের পর যুগ চলেছে শান্তির পথে, প্রগতির পথে, শিল্প ও সংস্কৃতির পথে যা থেকে বিচ্যুত হওয়া মানে একটি জাতির মুখ থুবড়ে পড়া। শেষে রবীন্দ্রনাথের মহাকালমুগ্ধ ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে সুচি হোক ধরা’ গানের লাইনটি স্মরণ করে পৃথিবীর সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনা করছি। 

মন্তব্য: