সমান্তরাল
যে কোন ছায়ার ভেতর বাস করে কিছু পাপ ও নির্জনতা।
তাই কাঁচ ভেঙ্গে গেলে শব্দ হয়, আলো আসলে চিকচিক করে ওঠে বালু।
তোমার কাছে যাবো বলে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছে যে মনখারাপ হাওয়া; এবারের চৈত্রে তার মাতাল হওয়া হবে না। কারণ জ›মদিনে তুমি তার হাতে পরিয়ে দিয়েছ ছায়ার ঘড়ি-
যাতে সারাদিন নির্জনতার শব্দ হয়।
পুরানের প্রসঙ্গ এলে তোমার ভেতর জেগে ওঠে কিছু মৃত নদীর নাম। যেখানে একদা তুমি পাপকে ছেড়ে দিতে। তুমিতো জানো নির্জনতার মতো পাপও ভীষণ একা।
অথচ দেখ- তোমার আইফোন কী ভীষণ ভিজ্যুয়াল।
আর তুমি- রেললাইনের মতো কেমন সমান্তরাল হয়ে থাকো।
সুতরাং- প্লাটফর্ম ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের শব্দকে আমরা দীর্ঘশ^াস বলতে পারি।
কালো চাঁদের বসন্ত
তোমার বুকের ভেতর যে চন্দ্রবিন্দু ছিল, সেই বিন্দুই আজ চাঁদ।
তাইতো বটপাতার কাছে জ্যোৎ¯œারও কিছু ঋণ আছে
নইলে সারারাত বাতাস তাকে নাড়াবে কেন?
যেতে যেতে ওপাড়ার মেঘও রেখে যাবে আকাশের পাহাড় পাহাড় গল্প, পাতায় পাতায় জলের কুচকাওয়াজ।
অতিথি পাখিরা জানে না শীত ফুরাবার আগে সাথীরা কেউ কেউ মারা যাবে। কারও কারও ডানায় ভেসে যাবে সন্ত্রাস ও সৌন্দর্য্যরে পরমপরা।
একদিন আমিও অরণ্যের দরজায় ঝুলিয়ে দেবো পাথরের শীতকাল
আর তোমার সামনে দাঁড়িয়ে বুকের ভেতর এঁকে নেবো
কালো চাঁদের বসন্ত।
আয় পুরুষ
জলের কাছে যাই- চল নেচে উঠি।
পায়রাগুলো ছেড়ে দিলে উড়ে যাবে গোটা বসন্ত।
দৃষ্টির শেষরং নীল, মাটি সংলগ্ন ঘাস আমি
এক অবেলায় এসো- ছুঁয়ে দেবো তোমার শিশির।
কে যেন কলধ্বণি ছিল, মেঘ না কী রাজহাঁস।
তোমার বাগান ভর্তি আপেল ফল
শরীরে অন্ধকার নিয়ে কে প্রথম ডেকেছিল
আয় পুরুষ….
কার হাতে ছিল শাদা শাদা নাকফুল নদী।
চলো জলের কাছে যাই- নাচ করি
তুমিতো জানো মানুষের ছদ্মবেশে মানুষ মূলত ফড়িং।
সূর্যমুখি ও বেলুনঘুড়ি
কেউ কেউ অরণ্য খুঁজতে গিয়ে ঘরে নিয়ে আসে মানচিত্রের পৃথিবী।
কারও কারও বুকে অশোকলতার ঝাড়।
কুয়াশারা উড়ে যায়- প্রেমপত্রের মতো নীলনীল বেলুনঘুড়ি।
তুমি মুখর চৈত্রমাস-
তোমার ঘুঙুরের শব্দে ফড়িং পাখিরা আসে। ডানায় লাগিয়ে নেয় বাংলা খাতার রঙ।
নাচের ক্লাস তাই জটলা পাকানো রবিবার।
যে কোনদিন তুমি হাসতে পার- যে কোন ফুলকে বলতে পার সূর্যমুখি।
কেননা ফুলেরা ভীষণ প্রেমিক।
ঝাড়বাতির মতো তারাও ভালবাসে চাঁদ-ঠুমরী আর তোমার জলসাঘর।
তাই কোন একদিন সূর্যেরও নাম হতে পারে বেলী কিংবা রজনীগন্ধা।
সাঁওতালি নদী
আমার জন্মের পরে যারা শাঁখ বাজিয়েছিলন, তারা কেউ আজ বেঁচে নেই।
অথচ রোজ ক্যানভাস থেকে উড়ে যায় সাতঝাঁক পাখি।
মায়ের চোখের গভীরে যে চৈত্রমাস ছিল, তার একপ্যারা অনুবাদ আমি।
আজও জন্মের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালে ঘুমের মতো ভেসে ওঠে
প্রথম দেখা মায়ের মুখ- কেমন খুশিখুশি জাফরানী কন্যা।
আমি যখন প্রথম কেঁদেছিলাম- দাদি-দিদারা তখন হাসাহাসি করেছিলেন।
বড় হতে হতে সেইসব নারীদের আর দেখিনি-
তবুও তাদের জন্য এক সাঁওতালি নদী বুকের ভেতর রোজ বড় হয়।
আজও জন্মের পরে পৃথিবীর কোথাও কোথাও কেউ কেউ হেসে ওঠে।
জানো, আমি তার একজনকে