আরশিনগর
গাছে গাছে নিঃশব্দ কুসুম। আমি যাবোÑ ওই বাগান আমার, ওই শিল্পরেখা আমার বিস্ময়। আকাশ বোনের বুকে নীলের গহন। আমি তার সহদর ভাই। আমার পেছনে ধবলিমা স্মৃতি, দৃশ্যের দু-চোখে অনন্ত সুমুখ। অধিক জন্মের ঘোরে কার চোখে রেখেছি ডাগর। সেই সোনার চাঁন কই গেলো, তারে খুঁজি রাতের গোপনে। লালনের হাত ধরে হাঁটি, ছেঁউড়িয়া পার হয়ে যাই- কতদূর আরশি নগর।
জোনাক পাথর
চারিদিকে প্রার্থনার পাঞ্চালি বাতাশ। চোখের তারায় মাছরাঙা জলের হিজল। ডানাওয়ালা আকাশ উড়াল দেয়, বুক জুড়ে মোমআগুনের নিশি। অন্ধকার চুয়ে নামে পৌষের পরজবতী ঘুম- সমুদ্রের নীলগিরি জ্বালা। দিনভর ফিরে যায় লাল-নীল ছায়ার মিথুন, আরশির বিদিশায় উজার শূন্যতা, দুই হাতে মেঘের মল্লার। কে তুমি প্রত্নচারী, টানা শতাব্দী ঝুলে আছো জোনাক পাথরে; পাখিদের সুগন্ধ বাগানে আরও কিছু দিন। জ্যোৎস্নার শিশির জলে টুপটুপ নিমফুল চাঁদ, আকাশে আকাশে দুধরঙ শাদা পাখি।
অথৈ পুরাণ
দূরে যাব। বিষণ্ন রাতের মত দূর। গোল অন্ধকারে দাঁড়িয়ে নিজেকে ডাক দেবো ফের। অজুদ অতল থেকে খুঁজে নেব মেঘনাচের অথৈ পুরাণ। রাংতা পাতার বনে কুসুমের মৃত হাহাকার- চন্দ্রধ্বনি নিশা। অগ্নিপারা ছুঁয়ে যাবে যৈবতীর প্রথম সন্ন্যাস। আরো দূরে সময়ের অস্থির পালক। নক্ষত্র পরীর ডানায় ছোপ ছোপ সারেঙ্গী হাওয়া। যে পাথরে হাত রাখি তার নাম নীলা। নদীও পাথর হয়, জলের গোপন জলে চূর্ণ পরকীয়া। আজ রাতে উজ্জয়নী ছেড়ে যাবে অসংখ্য রমণী; আজ রাত ফেটে যাবে গুচ্ছ গুচ্ছ অলকায়।