বাতাসের রেলগাড়ি
বাতাসের রেলগাড়িতে দুরবিন স্মৃতির কোলাহল উড়ে যায়।
ধূলিঝড় বুকের পাটাতনে সবুজ ধানপাতার পিছুটান ভুলে
নৈঃশব্দ্যের বোবা নদীতীরে জলের ঠোঁটে চুম্বন এঁকে দেয়;
চুম্বনের ভাষা তো বোঝে না চঞ্চলা উদাসী বৈশাখী পিঞ্জিরা।
কলাপাতার অবুঝ শব্দ হৃদয়ের মন্দিরজুড়ে উড়–উড়– হাতছানি
বাতাসের রেলগাড়ি নিঃশর্ত জীবনের সরুপথে ধূলি উড়ায়।
বৈশাখী যুবতীর কালো মেঘের আঁচলে ঝরাপাতার কারুকাজ
জোছনার উঠোনে দুধেধোয়া নবজাতক শাদা আলো হতে চায়।
বাতাসের রেলগাড়ি শন্শন্ ঢুকে যায় ফুসফুসের স্টেশনে
কখনো কখনো ঊর্বর নিঃশ্বাসের চিক চিক পাতাল রেলপথে
মাতাল হয়ে অবিরাম চলছে; চলছে লাল নীল ঘুমের মহাশূন্যে।
বৈশাখী ঝড়ন্মুক্ত আঙিনার কীর্তন
মুণ্ডামনের চোয়ালে স্বপ্নের ঝাড়-ফুঁক হোক না আদিমতম বুনোবিশ্বাস।
চারিদিক যখন বৈশাখী বিশ্বাসন্ন না থাকায় মু-ামন উপোস-
কোথায় গৃহদেবতা বোঙ্গা;
কোথায় দোসাদ দেবতার চন্দ্রগ্রহণ?
এখনো দমির গতরে লাগেনি মৈত্রিমঙ্গল
তবুও বিশ্বাসের বিস্ময়েই জুমপাহাড়ের উরুতে বেজে যাচ্ছে ঝড়বাদ্য।
যুগ-যুগের আদিপথ থেকেই
নৃ-মৃত্তিকাসিক্ত মুণ্ডামনের কীর্তন- কখনোই ঢুকতে পারেনি;
সকালের কুসুমকুসুম আলোনগরের স্বপ্নসঙ্গমে।
যেম্মায় নৃ-তাত্ত্বিক শরণার্থীর আগমন
তখনই আমতা আমতা বৈশাখী স্বীকারঠাট্টা।
ঠাট্টার মাট্টা দেখে-মুণ্ডামনের সাদাসিধা চিৎকার
যেম্মায় থেমে যায়-ছিদাকলার ঝড়ন্মুক্ত আঙিনায়।
* মুণ্ডামন = উপজাতির মন, * বিশ্বাসন্ন = বিশ্বাস করে যে অন্ন খায়
* বোঙ্গা = সাঁওতালদের দেবতার নাম * দোসাদ = দেবতার নাম
* দমি = পাখির পালকের তৈরী এক ধরণের সম্মানের মুকুট
* যেম্মায় = যেখানে * মাট্টা = অবহেলা
* ছিদাকলা = শ্মশান