সনোজ কুণ্ডু ‘র কবিতা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

অন্ধকারের গুণিন

সে আমার কান্নাভেজা পথ- বহতা নদীর মত দীর্ঘ। প্রাচীন মুদ্রাজলে সূচি হয়নি ঋতুবতী তৃষ্ণা। রাতের মত একা কাঁদে পৌরাণিক পাপ। দীর্ঘশ্বাসের অক্ষর গুনে গুনে মনঘড়ি রূপান্তর হয়। আজো আমি চূর্ণে চূর্ণে বিচূর্ণ হই অরণ্য সঙ্গমে। রাত্রির গোপন ভাঁজে ভাঁজে আজো আমার মৃত্যু হয়। নিসর্গের বুকে বাস করে আজো আমি বৃক্ষ নিধন করি। শব্দকে বস্ত্রহীন করে চলি সামরিক কবির মত। মৃত্যুর নৈঃশব্দ্য জ্যোস্নায় ভিজে বাদুড় হতে চায় অন্ধকারের গুণিন। রতিশাস্ত্রের অভিধান খুলে পাখিকুল হাসে; আর ফিরে যেতে চায় সভ্যতার আর্য পথে !!

শূন্যের সরল রেখা

একদা আত্মজার গর্ভে জন্ম নিল গণিতের সরল। সেই সরল রেখায় জীবন মেলেনি বলে আগুনের তরল ভাষা বুঝিনি। পাঠশালা থেকে ইতিহাসের পথে হেঁটে হেঁটে হয়ে গেছি ভূগোল। দোয়াতে কঞ্চি চুবিয়ে তালপাতায় অক্ষর বানাতে গিয়ে সেজেছি কালির ভূত। সময়ের ঘড়ি শূন্যে ওড়ে- মৈশাল বৌ পোড়ে মোমনিশি- বুকে তার নিরবধি তৃষ্ণা। ঘুড়িকে ঈশ্বর ভেবে লাটাই চেয়েছি ওড়াতে, শেষ থেকে জীবন চেয়েছি শুরু। বৃক্ষের নিমন্ত্রণে ছায়াঘরে এসে নিয়ে গেছি ঝরা পাতার দীর্ঘশ্বাস। জানা নেই কখনো পথও পথিক খোঁজে, মেঘ খোঁজে পিপাসু চাতক। ঘরের ভেতরও থাকে ঘর। সব ঘর ঘরণীর নয়। সব নদী নয় সাগরের। মরানদীর বুকে জলকাব্য লিখে ভালবাসার সেতু বানাতে হয়। অনেক সাগর খুঁজে যেটুকু পেলাম নীল- সে আমার অন্তরীক্ষের শূন্যের সাইরেন। 

কবিয়াল

আগুনে হাত রাখেন কবির ঈশ্বর। নাফ নদীর চতুরস্রোতে খুঁজে পান প্রান্তিক শূন্যতা। কামনদীর রহস্যে ডুবে এবার সিদ্ধ হবেন কবি। সওদাগরীর শূন্য পাতা পূর্ণ হবে অপূর্ণতার বৈরাগ্য সুরে। প্রচলিত প্রথার সূঁচেগাঁথা সতীন পাখিটির আজ থেকে শুরু হবে পতিতাভ্রমণ। উত্তরগোলার্ধের সীমায় সীমায় ছড়িয়ে দেবে প্রজাপতি সুখ। অযুত রূপের বহুরূপ থেকে মুক্তি পেয়ে কবি খুঁজে পাবেন সভ্যতার সহজীয়া পথ। আদিম খাঁচায় বন্দি মৈশাল বউ ফিরে পাবে শতবর্ষের নিবেদিত নিয়তি।

মন্তব্য: